আজকের শিরোনাম :

হাটহাজারীতে আবারও নিখোঁজ কিশোরীর গলিত লাশ উদ্ধার, আটক ১

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:০৮

হাটহাজারীতে কলি আক্তার(১৬)নামে এক নিখোঁজ কিশোরীর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ।  গতকাল বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাত প্রায় দশটার দিকে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দানু মিয়া কোম্পানীর ইটভাটা সংলগ্ন এলাকার টয়লেটের ট্যাংক থেকে ওই কিশোরীর গলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা লাশটি উক্ত ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের খিল্লা পাড়া প্রকাশ তুফানের বাড়ির চুট্টু মিয়ার কন্যার বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় মডেল থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে ৭,দন্ড বিধি-৩০২,২০১,৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে,যার নাম্বার ২৫/১৮/১০/১৮ ইং।  গত মাস খানেক আগেও হাটহাজারী সদরের একটি ভবন থেকে এক স্কুল ছাত্রীর গলিত লাশ উদ্ধার করেছিল মডেল থানা পুলিশ।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনতা উল্লেখিত এলাকার টয়লেটের ট্যাংকে একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বেলাল উদ্দীন জাহাংগীর এবং ওসি (তদন্ত) মো.শামীম শেখ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে কিশোরীর গলিত লাশটির সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক)হাসপাতালে প্রেরণ করে মডেল থানা পুলিশ।

নিহত কিশোরী কলি আক্তারের মামা মো.শহিদ সাংবাদিকদের জানান, প্রায় এক বছর ধরে মির্জাপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সন্দ্বীপ কলোনীর মো.নাছিরের ছেলে তিন সন্তানের জনক নজরুল মিঠু প্রকাশ হৃদয় নামের ঐ বখাটে কলি আক্তারকে প্রেমের ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।  কিন্তু ওই বখাটে বিবাহিত হওয়ার কলি আক্তার ও তার পরিবার বখাটে মিঠুর প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর (শনিবার) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে মান-সম্মান যাবে ভেবে কাউকে কিছু জানাইনি। ভেবেছিলাম ওই বখাটে পরে কলিকে বাসায় পৌঁছে দেবে।  তবে সেদিন রাতে কলির বাবা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেছিলেন।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, ওই বখাটের প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় তাকে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত বখাটে মিঠুর ফাঁসির দাবিও জানান তারা।

এ ব্যাপারে মডেল থানার ওসি(তদন্ত)মো.শামীম শেখ সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার থেকে ওই কিশোরীকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অভিযোগ করে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেছিল নিহতের পরিবার।  যার নাম্বার ৮৪৬/১৮।

মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, এবং অভিযুক্ত বখাটে মিঠুকে আটক করা হয়েছে এবং তাকে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভার শাহাজালাল পাড়ার একটি ভবন থেকে গড়দুয়ারা ইউনিয়নের নেয়ামত আলী সারাং বাড়ির আবু তৈয়বের মেয়ে এবং হাটহাজারী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিম সুলতানা তুহিনের (১৩) গলিত লাশ একই ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটের ড্রয়িং রুমের সোফার নিচ থেকে বস্তা বন্দি অবস্থায় উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ।

তুহিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ওই ভবনের ভাড়াটিয়া পৌর এলাকার চন্দ্রপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মো.শাহাজাহান সিরাজের ছেলে শাহানেওয়াজ মুন্না বর্তমানে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করা হলেও প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত আটক করা যায়নি এ হত্যা মামলার ২ ও ৩ নং আসামীকে।  গত মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর মুন্না তুহিনকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল।
 
এবিএন/মোঃ আলাউদ্দীন/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ