আজকের শিরোনাম :

সোনাগাজীতে জোর করে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা : পালিয়ে ঠেকালেন কিশোরী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:০৩

সোনাগাজীতে নাদিয়া সুলতানা সামিয়া নামে (১৩) এক কিশোরীকে জোর করে ফুপাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তার পরিবার। শারীরিক নির্যাতনের পরও বিয়েতে রাজি করাতে পারেনি তাকে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে পালিয়ে নিজের বিয়ে ঠেকালেন ওই কিশোরী।

গত শনিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ গতকাল রবিবার গভীর রাতে হবু বর খুরশিদ আলমকে আটক করেছে। সামিয়া ও খুরশিদ সম্পর্কে মামাতো-ফুপাতো ভাই বোন।

সুত্র জানায়, নাদিয়া সুলতানা সামিয়া উপজেলার বগাদানা ইউনয়নের আড়কাইম গ্রামের ইসমাঈল পাটোয়ারি বাড়ির প্রবাসী আমির হোসেনের কন্যা। সে ২০১৭ সালে তাকিয়া বাজার ওসমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭ম শ্রেনীতে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার পর তার পিতা-মাতা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

জানা গেছে ,গত কয়েক দিন পূর্বে তার পিতা-মাতা চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরসাহাভিকারী গ্রামের লেদু মাঝি বাড়ির আহসান উল্যাহর ছেলে কাতার প্রবাসী খুরশিদ আলমের (৩২) সাথে কিশোরীর বিয়ে ঠিক করে ফেলে। তাকে ফেনী শহরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে সেখানে গোপনে বিয়ের আয়োজন করে। এতে সে রাজি না হলে গোপনে তাকে তার নানার বাড়িতে নিয়ে আসে।

 মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মঙ্গলকান্দি গ্রামের নানা মনু মিয়ার বাড়িতে এনে গত শনিবার রাতে গোপনে আবার বিয়ের আয়োজন করে।এতেও কিশোরী রাজি না হলে তার পিতা-মাতা ও হবু বর তাকে পিটিয়ে আহত করে। শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে কিশোরী সামিয়া কৌশলে পালিয়ে মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের গ্রাম পুুলিশ তাজুল ইসলামের দ্বারস্থ হয়।

গ্রাম পুলিশ তাজুল ইসলাম মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে রোববার দুপুরে কিশোরীকে উদ্ধার করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যান। ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল বিষয়টি জানার পর কিশোরীর পিতা-মাতাকে খবর দেন। তারা তার আহবানে না এলে সে কিশোরীকে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
সোনাগাজী থানার পুুলিশ রবিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ফুপাতো ভাই খুরশিদ আলমকে তার বাড়ি থেকে আটক করে।

পুলিশ হেফাজতে থাকা কিশোরী সামিয়া প্রতিবেদক কে বলেন,সে বাল্য বিবাহের অভিশাফ থেকে সমাজ কে মুক্ত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।নির্যাতন করলেও সে তার পিতা মাতার শাস্তি দাবী  না করে বলেন,তারা যেন আমাকে পড়ালেখা করায় প্রশাসন সে ব্যবস্থা করে দিবে।

কিশোরীর মা রহিমা খাতুন বলেন, ছোট বেলায় খুরশীদের মা মারা যাওয়ার পর আমরা তাকে পড়ালেখা করিয়ে বিদেশ পাঠায়। সামিয়ার সম্মতিতে তার সাথে ৫ বছর পর বিয়ের কথা হয়েছে।এরমধ্যে সে পালিয়ে থানায় চলে যায়।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কিশোরী সামিয়ার সাহসিকতা হাজারো কিশোরী বাল্য বিয়ে থেকে মুক্তি পেতে উৎসাহী হবে।সে তার পিতা মাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে রাজী না হলেও এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ