আজকের শিরোনাম :

ভেড়ামারায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০১৮, ১৫:৫৮

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া), ১৯ মে, এবিনিউজ : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর উনিয়নের রায়টা নতুন পাড়া গ্রামের মোছা. রঙ্গিলা খাতুন (৩৭) নামে এক গৃহবধূর গতকাল শুক্রবার সকালে রহস্যজনক মৃত্যু’র খবর পাওয়া গেছে। নিহত রঙ্গিলা খাতুন ওই গ্রামের মো. সাইদুল প্রামানিক (৪২) এর স্ত্রী। নিহতের বাবার বাড়ির স্বজনদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ নিহতের স্বামী সাইদুল ও তার নব-বিবাহিতা ৩য় স্ত্রী মিলে রঙ্গিলা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাইদুলের নব-বিবাহিতা ৩য় স্ত্রী’কে আটক করেছে এবং এঘটনায় নিহতের স্বামী সাইদুল পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই মো. আব্দুল আজিজ বলেন, আমার আপন বোন মোছা. রঙ্গিলা খাতুন এর সহিত ২১/২২ বছর আগে মো. সাইদুল প্রামানিক (৪২) পিতাঃ মৃত জামাত প্রামানিক, সাং-রায়টা নতুন পাড়া, থানা. ভেড়ামারা, জেলা. কুষ্টিয়া-এর সাথে বিবাহ দেই। বিবাহের পর আমার বোনের কোল জুড়ে তিনটি সন্তান আসে।

এবং আমার ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ সকাল ৮ টার সময় সাইদুলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আমার ছোট বোনের মরদেহ সাইদুলের বাড়ীর উঠানের চৌকির উপর দেখতে পাই। এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার বোনকে সাইদুল ও সাইদুলের তৃতীয় স্ত্রী মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ঘরের ডাবের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে তারা আত্মহত্যার নাটক সাজায়। তখনই আমরা বুঝতে পারি আমার বোন রঙ্গিলা খাতুন আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এব্যাপারে আমি ভেড়ামারা থানাতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে সাইদুলের বাড়ী থেকে মোছাঃ রঙ্গিলা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা সে ব্যাপারে ষ্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। রহস্যজনক মনে হওয়ায় তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিগত ৪/৫ বছর পূর্বে সাইদুল প্রামানিক অন্য একজনের স্ত্রীকে বের করে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশী বৈঠকে সে সময় দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাকের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। এঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে রঙ্গিলা খাতুনকে তার স্বামী সাইদুল নানান অজুহাতে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে এবং দুইবার প্রাণ নাশেরও চেষ্টা চালায়।

পরবর্তীতে গত ১৪/১৫ দিন আগে সাইদুল আবারও অন্য জনের স্ত্রীকে বের করে এনে তৃতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ভাড়া বাড়ী থেকে নিজ বাড়ীতে তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে আসলে রঙ্গিলা খাতুনের উপরে চলতে থাকে অমানবিক নির্যাতন। তারই জের ধরে গতকাল শুক্রবার ১৮/০৫/২০১৮ ইং তারিখ রাতে সাইদুল ও সাইদুলের তৃতীয় স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘরের ডাবে সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে বলে প্রতীয়মান হয়। ময়নাতদন্ত শেষে নিহত রঙ্গিলা খাতুনকে মেঘনাপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে নিহতের ভাই আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেছেন।

এবিএন/সাইফুল ইসলাম/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ