আজকের শিরোনাম :

আওয়ামী লীগের নৌকা চান বিএনপি নেতা মনির উদ্দিন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৯

তৃতীয় ধাপে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট চান উপজেলা বিএনপির সাবেক সংস্কৃতিক সম্পাদক ও দরগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন। ইতোমধ্যে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। সময়ের পরিবর্তে এখন দরগাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে তিনি দাবি করছেন। স্থানীয়রা ত্যাগী নেতারা বলছেন, বসন্তের কুকিলের মতো সুবিধা হাসিল করতে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাচ্ছে এই বিএনপি নেতা। বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা।

স্থানীয়র তৃণমূল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে জানালেন, মনির উদ্দিন আওয়ামীলীগে একজন অনুপ্রবেশকারী। তিনি ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা (বর্তমানে শান্তিগঞ্জ উপজেলা) কমিটিতে বর্তমান শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদকে সভাপতি ও ফাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ আমিনকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা কমিটি দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও প্রথম সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। তাদের স্বাক্ষরিত কমিটির মনির উদ্দিন উপজেলা কমিটির সংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ছাত্র জীবন থেকে বিএনপির সমর্থিত ছিলেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা অবৈধ সুবিধা পেয়ে তাকে নৌকার মনোনয়ণ পাইয়ে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এবারও নৌকার মনোনয়ণ পাইয়ে দিতে চেষ্ঠা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মীরা বললেন, দলের অনেক ত্যাগী দুর্দিনের নেতারা রয়েছে। কিন্তু তাদেরকে মূল্যায় করা হচ্ছে না। দলীয় কিছু নেতাদের কারণে অনুপ্রবেশকারীরা শক্ত অবস্থানে যাচ্ছেন। তারা  সুবিধা নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদেরকে স্থান দিচ্ছেন। এতে করে দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশায় ভোগছেন। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, মনির উদ্দিন একজন বিএনপি নেতা। কিন্তু আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হওয়ার পরও বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে ছিল সখ্যতা। বছর-দু-একের ভিতরে দরগাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু বক্কর আলা মিয়া মারা যান। এরপর থেকেই তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বলে দাবি করে প্রচার শুরু করেন। অথচ. তিনি ইউনিয়ন কমিটির সদস্যও না।

এ ব্যাপারে দরগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আমি আওয়ামীলীগ করছি। ৯৬ সালেও আওয়ামীলীগের জন্য মারা মারি করেছি। দীর্ঘদিন  প্রবাসে থাকায় রাজনীতিতে ছিলাম না। গত ইউনিয়ন নির্বাচনের আওয়ামীলীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছি। এবারও করবো।

দরগাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছে। আমাকে দলীয় নেতাকর্মীরাসহ উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ ইউনিয়ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেন। তবে বিএনপির সংস্কৃতিক সম্পাদক প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম না। একটি পক্ষ আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালায়।

এব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন,  ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আবু বক্কর আলা মিয়া ছিলেন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন। সেসময় থেকে এখনো আমি সিনিয়র সহসভাপতি। কিন্তু আবু বক্কর আলা মিয়া মারা যাওয়ার পর গঠনতন্ত অনুযায়ী আমি সভাপতি দায়িত্ব পাই। কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগের একাংশের কিছু নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা মনির উদ্দিনকে সভাপতি ঘোষণা দেয়। অথচ. কাগজপত্রে এখনো আলা মিয়া সভাপতি রয়েছেন। গত ইউপি নির্বাচনেও বিএনপি নেতা মনির উদ্দিনকে আওয়ামীলীগের মনোনয় দিয়েছে দেয়া হয়েছে। এবারও নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেতে দৌড়যাপ শুরু করেছে মনির উদ্দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু নির্দেশ দেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে কিন্তু দলীয় কিছু নেতারা বাণিজ্যিকভাবে অনুপ্রবেশকারীদেরকে স্থান দিচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, গত ১০ বছর ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছেন মনির উদ্দিন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কমিটির সভাপতি দায়িত্বে আছেন। বিএনপির রাজনীতিতে ছিলেন কি না জানতে চাইলে বলেন, তিনি এসব জানেন না।  তবে অনুপ্রবেশকারীদের মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, যারা নমিনেশন দিবেন তাদের বিষয়ে যাচাই-বাচাই করা হবে। আমরা উপজেলা কমিটির সতর্ক হয়ে নামের তালিখা জেলা কমিটির কাছে পাঠাবো।


এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ