আজকের শিরোনাম :

চোখের সামনে পদ্মায় বিলিন স্কুল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:৩৫

অবশেষে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মায় বিলিন হলো রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর সেলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আজ (শুক্রবার) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ব্লক ভেঙে বিদ্যালয়টি নদীতে ধসে পড়ে। এ সময় এলাকার শত শত মানুষ তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি নিজের চোখে নদীগর্ভে চলে যেতে দেখে কাঁদতে থাকেন।

স্কুলটি ভেঙে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে গেল। তবে প্রশাসন বলছে, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার যাতে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সে বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের জন্য ৩৭৬ কোটি টাকার কাজ হয়। সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই কয়েক দফা ভাঙনে সাড়ে ৭ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার এলাকার কংক্রিটের তৈরি সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার নদী ভাঙন রোধে এত টাকা ব্যয় করছে অথচ যারা ঠিকাদার তারা কাজ ভালো করছে না। ভালো মতো কাজ করলে আজ এই বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে যেত না।

স্থানীয় বাসিন্দা নায়েব আলী শেখ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে আজ আমাদের একমাত্র স্কুলটি রক্ষা করা গেল না। নদীর পেটেই চলে গেল স্কুলটি। এদিকে প্রায় আড়ইশ পরিবার এখন হুমকির মুখে রয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির বলল, আমাদের পড়ালেখার একমাত্র স্কুলটি আজ নদীতে চলে গেল। আমরা এখন কোথায় পড়ব?

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকির বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার পর থেকে বিদ্যালয়ের মূল ভবনেই পাঠদান করাচ্ছিলাম। হঠাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর ভোরে স্কুলের পাশেই সিসি ব্লক ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ার পর থেকে আর ওখানে পাঠদান করাইনি। কারণ তখন মূল ভবনটি চরম ঝুঁকিতে ছিল। শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পাশের টিনশেডে ক্লাস নিচ্ছিলাম। কিন্তু আজ স্কুলের ভবনটি নদীগর্ভে চলে গেল।

মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, মিজানপুর ইউনিয়ন রাজবাড়ী জেলার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন এরইমধ্যে মিজানপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ৩টি ওয়ার্ড নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন ৭ নম্বর ওয়ার্ডও ঝুঁকিতে রয়েছে। এই এলাকার দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ এখন হুমকিতে রয়েছেন।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ বলেন, পদ্মা নদীর পানি কমার কারণে হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ