আজকের শিরোনাম :

মদনে সারের দাম বৃদ্ধি, হাওরাঞ্চলের কৃষক দিশেহারা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫৪

নেত্রকোনার মদনে হাওরাঞ্চলে আমন চাষের শুরুতেই সার বেশি দামে বিক্রি করায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেও কৃষকদের দিচ্ছে না কোন রসিদ। দামের মূল্য ঝুলানোর কথা থাকলেও কোন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরাতা মানছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

 পৌরসভাসহ বিসিআইসির ৯জন ডিলার ও ৮০ জন খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছেন। এবার পৌরসভাসহ উপজেলার আট ইউনিয়নে ৯ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতেই আমন ধান রোপন করা হয়েছে।

কৃষকদের কাছ থেকে টিএসপি, ডিএপি, ইউরিয়া, বাংলা ডিএপিসহ বিভিন্ন সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও ডিলাররা কোন পাকা রসিদ (ভাউচার) দিচ্ছেন না। এতে বেশি দামে সার বিক্রির বিষয়ে প্রমাণসহ কারও কাছে অভিযোগও দিতে পারছেন না কৃষকেরা।

এবার বর্ষার পানি দ্রুত সড়ে যাওয়ার কারণে কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে গতবারের তুলনায় আমন চাষে অধিক মনোযোগী হয়ে পড়েছে। কিন্তু ধানের চারা চড়াদামে কিনে এমনিতেই কৃষক দিশেহারা এর মধ্যে ন্যয্যমূল্যে সার কিনতে পারায় তারা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এভাবে চড়ামূল্যে সার কিনতে হলে লাভের তুলনায় লোকসানে পড়তে হবে বলে কৃষকদের ধারণা।

কৃষকের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও সর্ববৃহৎ দেওয়ান বাজারে সরজমিনে গেলে দেখা গেছে কৃষকরা বেশি দামে সার ক্রয় করলেও কোনো  রসিদ দিচ্ছেন না ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও কোন ডিলার, খুচরা ব্যবাসীয়ারা এমন নিয়ম মানতে দেখা যাচ্ছে না।

ডিলারের দোকানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা,  ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ১১শ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ১২শত থেকে ১৩শ,  ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ৮০০ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ৮৫০  থেক ৯০০ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৯০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা, বাংলা ডিএপি ৮০০ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সার কিনতে আসা কৃষক ফতেপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার, সাইতপুর গ্রামের শরীফ মিয়া জানান, এবার দ্রুত পানি চলে যাওয়ার কারণে অনেক আশা নিয়ে অধিক দামে ধারে চারা সংগ্রহ করে আমন জমি রোপন করছি। কিন্তু সারের যে এত দাম কেমনে জমি চাষ করব। বাংলা ডিএপি ১ বস্তা কিনতে লাগছে ১৬০০ টাকা, ইউরিয়া কিনতে হচ্ছে ৯৫০ টাকায়। অস্বাভাবিকভাবে সারের মূল্য বৃদ্ধি বেড়ে গেছে। সার কিনতে গিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তার ওপরে করোনাকাল। সবকিছুর দাম বেশি। কিন্তু আয় নেই। হাওরাঞ্চলের মানুষের দুটিই ফসল একটি আমন আর একটি বোরো। এর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয় সারা বছর।

ডিলার দিবাকর জানান, আমরা চাহিদা অনুযায়ী সার পাইনি। অন্য জায়াগা থেকে অধিক মূল্যে সার কিনতে হয়েছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দেয়া হয়নি, পাশাপাশি পানি দ্রুত সড়ে গেছে, কৃষক এবার আগের তুলনায় আমন ধান বেশি রোপন করছে। আমাদের সার অনেক সংকট রয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে মিটিংয়ে বলেছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। আমরা বাজারগুলি নিয়মিত মনিটরিং করছি। তবে কোন ডিলার বেশি মূল্যে সার বিক্রি করতে পারবে না। যদি বেশি মূল্যে সার বিক্রি করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও ইউএনও বুলবুল আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে ডিলারদের সাথে কথা বলব। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


  এবিএন/তোফাজ্জল হোসেন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ