সাতকানিয়ায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০১৮, ১৮:৫৮

চট্টগ্রাম, ১৭ মে, এবিনিউজ : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ইফতার সামগ্রী বিতরণকালে পদদলিত হয়ে নিহতের ঘটনায় কেএসআরএম-এর মালিক মোহাম্মদ শাহজাহানকে আসামি করে মামলার প্রতিবাদে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে কয়েক হাজার নারী পুরুষ। এসময় মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায় অংশগ্রহণকারীরা। কেএসআরএম-এর মালিক শাহজানের পক্ষেই মন্তব্য প্রকাশ করছে স্থানীয়রা।

সকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের একটি ব্যানের দেখা যায় মানববন্ধন আয়োজন করছে সাতকানিয়া সর্বস্থরের জনসাধারণ। ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, কেএসআরএম-এর পক্ষে ইফতার সামগ্রী ও যাকাত বিতরণের সময় হিটস্ট্রোক ও হুড়োহুড়িতে হতাহতের ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা এবং বিশিষ্ট শিল্পপতি, দানবীর, সাতকানিয়ার কৃতি সন্তান ও চট্টগ্রামের অহংকার কবির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি করেন সাতকানিয়া সর্বস্থরের জনসাধারণ।

মাননবন্ধনে স্থানীয়রা জানায়, কবির গ্রুপের মালিক আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহজাহান সাতকানিয়ায় অসংখ্য পরিবারকে দুর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে সচল ও সুন্দর জীবন গড়তে সহায়তা দিয়েছে। তার সহযোগিতায় জীবিকা নির্বাহ করছে হাজারো পরিবার। একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ এমন মানুষটাকে মামলা করে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। আমরা মানুষটি হয়রানীর শিকার হউক কোনো অবস্থাতেই তা চাইনা। আমরা তার হয়রানীর প্রতিবাদে আজ সবাই রাস্তাই নেমেছি। প্রতিবাদ জানাচ্ছি মামলাকারী ও ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিতদের। দাবি তুলছি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের।

মানববন্ধনের অংশগ্রহণকারী দিন মজুর সাহেলা আক্তার বলেন, সেদিনের ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা। এখানে মামলার প্রশ্ন আসছে কেন? কেএসআরএম গরীব মানুষদের ত্রাণ দিতে চেয়েছে। পিটিয়েতো মারেনি, তবে দানবীর মানুষটির বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে কেন? আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সোলায়মান নামে এক শিক্ষক বলছেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। দেশজুড়ে ঘটনাটি আলোচিত এখন। তবে ঘটনাটিযে দুর্ঘটনা সেটা মানতে হবে সকলকে।

তিনি আরো বলেন, নিহতদের মৃত্যু হয়তো সেদিনই লেখা ছিল। এমন দুর্ঘটনার জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। তবুও কবির গ্রুপ ঘটনার দায়ভার তাদের কাঁধে নিয়ে নিহতদের পরিবার ও আহতদের পাশে সার্বিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।

ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে প্রত্যেকের পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে দেয়ার। চাকরি করতে ইচ্ছুক নিহতদের পরিবারের একজন সদস্য পাচ্ছে চাকরির সুযোগ। এছাড়াও আহতদের সার্বিক খরচ বহন করছে গ্রুপটি। তার প্রশ্ন মামলা করলেই কি সব সমাধান হবে? বরং সাধারণ দুস্থ গরীব মানুষগুলো তাদের সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে।

সাতকানিয়ার ঘটনাটি তদন্তে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের তদন্ত টিম সাতকানিয়ায় উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে গাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাঙ্গরমুখ এলাকায় অবস্থান করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।

তদন্ত টিমে রয়েছেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাশহুদুল কবির, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) হাসানুজ্জামান, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিমা আক্তার।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তদন্তে টিমের প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্র্রেট মাশহুদুল কবির।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গা (হাঙ্গরমুখ) এলাকার কাদেরীয়া মুঈনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার মাঠে কেএসআরএম মালিকপক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণের সময় ভিড়ের চাপে নয়জন নারী নিহত হন। এ ঘটনায় খাগরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত হাসিনা আক্তারের স্বামী মো. ইসলাম ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে কেএসআরএম মালিক মো. শাহজাহানকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ