আজকের শিরোনাম :

বালিয়াডাঙ্গীতে রেকর্ড পরিমাণ পাটচাষ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২১, ১৩:৪১

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ পাট চাষ হয়েছে। উপজেলাটিতে কয়েক বছর থেকে পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া ও বৃষ্টি না হওয়ায় খরার কারণে এ সোনালী আঁশ কৃষকদের গলার 'ফাঁস' হয়ে দাড়িয়েছিল। বাজারে পাটের দরপতন হওয়ার ফলে চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল চাষিরা।

তবে বর্তমানে দেশে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়াতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার ফলে আবারো সুদিন ফিরেছে কৃষকদের ঘরে। কৃষি বিভাগের তদারকিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চলতি বছর পাটচাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পাটের ফলন বাম্পার হয়েছে। কৃষকরা দাম পেলে আগামীতে আরও পাটের আবাদ বাড়বে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩২৬ হেক্টর জমিতে। যেখানে প্রায় ৩১ হাজার ৪৩২ বেল পাট উৎপাদিত হবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ। গেল বছর পাটের আবাদ হয়েছিল ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের আবাদ বেড়েছে ৭১৬ হেক্টর জমিতে।

পাট চাষীরা করিম উদ্দীন জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ৮-১১ মণ পাটের ফলন পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২২’শ টাকা পর্যন্ত।

স্ব-পরিবারে বড়বাড়ী ইউনিয়নের স্কুলপাড়া গ্রামের পাকা রাস্তার পার্শ্বে জাগ দেওয়া পাটের ছাল ছাড়াচ্ছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, পাটচাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এমন কথা শুনে এ বছর দেড় বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা।

দুওসুও ইউনিয়নের আব্বাস আলী জানান, গত বছর তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। সরকারি সহযোগিতা ও প্রণোদনা পেলে আগামীতে বৃহৎ আকারে পাটচাষের পরিকল্পনা রয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল নিজে ১০ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। তিনি জানান, জমিতে পাটচাষে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। পাট কাটার কাজ শুরু করেছি। আশা করছি ভালো দাম পাওয়া যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় জানান, আমরা পাটের চাষাবাদ বাড়াতে এবং ভালো ফলনে প্রতিনিয়ত পাটচাষীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পাটের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পাট চাষে কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। এছাড়া এখন বাজারে পাটের ন্যায্যমূল্যও পাচ্ছেন চাষীরা। পাটের ভালো দাম পেলে উপজেলায় পাটের আবাদ আবারো বাড়বে। আমরা পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে নিয়ে আসব।

এবিএন/মোঃ রমজান আলী/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ