আজকের শিরোনাম :

চিলমারীতে ভাসমান তেল ডিপো রক্ষাসহ তেল সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৩২

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অবস্থিত ভাসমান তেল ডিপো সুকৌশলে লোকসান দেখিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পায়তারার প্রতিবাদ, ডিপো স্থায়ীকরণ ও তেল সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  আজ শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে জোড়গাছ পুরাতন বাজার এলাকায় চিলমারীর তেল ব্যবসায়ী সমিতি ও স্থানীয় কৃষকরা এ মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে।

ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন,চিলমারী জ্বালানী তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মতিয়ার রহমান ফুলবাবু, তেল ডিলার মাইদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন বাদল, কৃষক নুরুল হক, রফিয়াল হক, আহাম্মদ আলী, রাজু মিয়া, বাদশা মিয়া, নৌকার মাঝি এরশাদ প্রমুখ। বক্তাগণের দাবী এলাকার তেলের চাহিদাকে উপেক্ষা করে কোন কারন ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বার্জ দুটি তেল শুন্য রেখে কর্তৃপক্ষ ডিপোটি সরিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছে।

এ অঞ্চলের সম্পদ ভাসমান তেল ডিপোটি ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষাসহ অতি সত্বর জ্বালানী তেল সরবরাহের দাবী জানান তারা।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভাসমান তেল ডিপো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি কোম্পানী স্থাপিত হয়ে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় তেল সরবরাহ করে আসছিল।  কয়েক বছরের মাথায় পদ্মা তেল কোম্পানীটি বার্জ মেরামতের অজুহাত দেখিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়।  এরপর থেকেই মেঘনা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানী দুটি এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে তেল সরবরাহ করে আসছে। গত ৪মাস যাবৎ অজানা কারনে তেল ডিপো দু’টি তেল শুন্য রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

ভাসমান তেল ডিপো দু’টির অনুমোদিত ২২জন ডিলার প্রতি লিটার তেল ৬২ টাকা ৫১ পয়সায় ক্রয় ক্রয় করে খুচরা বিক্রেতাদের নিকট সরবরাহ করেন।  খুচরা বিক্রেতারা প্রতি লিটার তেল বিক্রি করেন ৬৫ টাকায়।  যমুনা ও মেঘনা তেল ডিপো দু’টি তেল শুন্য হওয়ায় পার্বতীপুর থেকে সড়কপথে তেল পরিবহন করলে ১লড়ি অর্থাৎ ৯ হাজার লিটার তেল আনতে অতিরিক্ত পরিবহন ও লেবার খরচ হয় প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার টাকা।

যা প্রতি লিটারে প্রায় ১ টাকা ৭৫ পয়সা বেশী। সব মিলে ডিলারদের তেল কিনতে হয় ৬৪টাকা ২৬পয়সায়। এরপর খুচরা বিক্রেতা থেকে খুচরা ক্রেতা। ফলে ক্রেতাদের তেল কিনতে হচ্ছে ৬৭-৬৮টাকায়।

উপজেলার চাহিদা মিটানোর পর নারায়নপুর, যাত্রাপুর, সাহেবের আলগা, রৌমারী, রাজিবপুর, সানন্দবাড়ী, জাফরগঞ্জ, কামারজানী ও উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেচ মৌসুমে ভাসমান তেল ডিপো থেকে প্রতিদিনের তেলের চাহিদা প্রায় ১হাজার ৫শ ব্যারেল বা ৩ লাখ লিটার হলেও বর্তমান সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে চালিত নৌকা, ড্রেজার মেশিন,বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে চালিত জেনারেটর,মাহেন্দ্র গাড়ী, নছিমন-করিমনসহ বিভিন্ন যন্ত্র এবং বৃষ্টি না হওয়ায় আমন চারা রোপনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৭শ ব্যারেল বা ১লাখ ৪০ হাজার লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে।

ডিলাররা অন্য ডিপো থেকে তেল নিয়ে স্থানীয়সহ বিদ্যমান এলাকা সমুহের তেলের চাহিদা পুরন করতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। এতে প্রায় প্রতিদিন ৪লাখ ২০হাজার টাকা অতিরিক্ত লেনদেন হচ্ছে এলাকায় সৃষ্ট তেল বাজারে। শুধু তাই নয়, এভাবে চলতে থাকলে ডিলারদের হাতে থাকা দীর্ঘ দিনের খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতা হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

ফলে চিলমারীর তেল ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রেতাদের নিকট পড়ে থাকা বাকী অর্থ উত্তোলন করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। অপরদিকে ডিপো দুটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন খেটে খাওয়া প্রায় ৩শ শ্রমিক কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে।

এবিএন/গোলাম মাহবুব/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ