আজকের শিরোনাম :

‌চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত উদ্ধার হলো ভংয়কর মাদক ‘খাট’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:২২ | আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:৪১

বাংলাদেশের মধ্যে ঢাকা শাহজালালে বেশ কয়েক দফায় উদ্ধার করা গেলেও চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত নতুন মাদক “খাট”র বড় চালান উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ইথিওপিয়া থেকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা নতুন ধরনের মাদক ‘খাট’র ২০৮ কেজির দুইটি বড় চালান জব্দ করে কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান ‘খাট’ জব্দের বিষয়টি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস কমিশনার জানান, খাটের চালান দু’টি ইথিওপিয়া থেকে এসেছিল ঢাকা পোস্ট অফিসে। সেকান থেকে গত ৩০ আগস্ট চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে চালান দুটি। সেখান থেকে চট্টগ্রাম ও ফেনির ঠিকানায় আসা দুটি পার্সেল চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, একই সময়ে দুটি আলাদা পার্সেলে মোট ১৩টি কার্টনে ২০৮ কেজি “খাট” বাংলাদেশে আসে। এগুলোর একটির প্রেরক ইথিওপিয়ার জিয়াদ মোহাম্মদ।  প্রাপক হিসেবে লেখা হয়েছে, মো. ইফতেখার হোসেনের নাম। তার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের হালিশহর নিউ এ ব্লকের এক নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ি। এ ঠিকানায় মোট ১০ টি কার্টনে ১৬০ কেজি “খাট” পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

অপর পার্সেলটিও এসেছে ইথিওপিয়ার জেমিরা ট্রেডিং (পিএলসি) থেকে। এটির প্রাপক হিসেবে দেওয়া হয়েছে আরিফ এন্টারপ্রাইজ। ঠিকানায় লেখা হয়েছে, প্রযত্নে আরিফ ভূঁইয়া, শান্তিধারা আবাসিক এলাকা, শান্তি কোম্পানি, ফেনী সদর, ফেনী।  এই ঠিকানার অনুকূলে তিনটি কার্টনে ৪৮ কেজি “খাট” পাঠানো হয়েছে।

কাস্টমস কমিশনার আরো বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৈদেশির ডাক বিভাগের মাধ্যমে আসা দুটি চালান জব্দ করেন তারা।  গ্রিন টি বা সবুজ চায়ের ঘোষণা দিলেও এসব কার্টন থেকে উদ্ধার করা হয় ভয়ানক মাদক খাট। ১৪ দিন আগে জব্দ করা হলেও এটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে শিউর হতেই কিছুদিন সময় লেগেছে।

তাছাড়া দুটি চালানের প্রতিটি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় মিথ্যা ঘোষণায় মাদক আনার বিষয়টি জানতে পারেননি বলে জানিয়ে কাস্টমস কমিশনার বলেন, বিপুল পরিমাণ খাট আমদানির সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তা খুঁজে বের করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। খাট সম্পর্কে কমিশনার বলেন, এটি হচ্ছে ক্যাথেলিন গ্রুপের একটি উদ্ভিজ্জ পদার্থ। এই মাদক ইয়াবার চেয়েও ভয়ঙ্কর। যা জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

“খাট” ভয়ংকর মাদক কেন ?  
উইকিপিডিয়া বলছে, হর্ন অব আফ্রিকা ও আবর উপ-দ্বীপাঞ্চলে জন্মায় গুল্ম জাতীয় এই মাদক। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘কাথা ইডুলিস’, যদিও স্থানীয়ভাবে একে খাট, কাট, খাত, ঘাট, চাট, অ্যাবিসিনিয়ান টি, সোমালি টি, মিরা, অ্যারাবিয়ান টি ও কাফতা নামেও ডাকা হয়।
খাটে অ্যালকালোইড ক্যাথিনন নামক এক ধরণের উদ্দীপক উপাদান থাকে, যার কারণে উত্তেজনা বাড়ে, ক্ষুধা কমে যায় এবং শরীরের উষ্ণতায় তারতম্য ঘটে। আমেরিকান কোকো পাতা, এশিয়ান পানের মতোই স্থানীয়দের মধ্যে হাজার বছর ধরে এই নেশা দ্র্রব্যের শুকনো পাতা চিবিয়ে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। তবে এর আসক্তি খুব ভয়ঙ্কর। খাটের কারণে অবসাদ, দৃষ্টিভ্রম, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ বেশি রস চিবিয়ে নেশা করলে বিপদও মারাত্মক। বিশেষজ্ঞদের বলছেন, ‘দাঁত এবং মাড়িতে ঘা হতে পারে। এ ছাড়াও, ইন্দ্রিয় শক্তি এবং যৌনক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাট জীবনী শক্তিও কমিয়ে দেয়।’

এবিএন/রাজিব সেন প্রিন্স/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ