আজকের শিরোনাম :

ভূরুঙ্গামারীতে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সীমাহীন ভোগান্তি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৩৭

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম, সীমাহীন দুর্নীতি ও জালিয়াতির কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এতে প্রতারিত ও হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। মিটারের তথ্য সংগ্রহ না করে মনগড়া বিল প্রস্তুত, বিলে ইউনিট বকেয়া রেখে পরের মাসে বকেয়া ইউনিট যোগ করে স্তর পরিবর্তন করে অতিরিক্ত বিল আদায়, সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পরেও গ্রাহকের নামে নিয়মিত বিল প্রেরণ, নিয়মিত ভাবে বিল পরিশোধ করার পরেও গ্রাহকের নামে বকেয়া উল্লেখ করে বিল পাঠানো, একই গ্রাহকের নামে মাসে একাধিক বিল সিট প্রেরণ, একজনের বিলের কাগজ অন্যজনকে প্রদান সহ অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

ভূরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ নিয়ে আসা ছোটখাটামারী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তার চাচা ইসমাইল হোসেনের বকেয়া বিল পরিশোধ করার পরেও পরিশোধিত বকেয়া পরবর্তী মাসের বিলের সাথে যোগ করা হয়েছে।  

খামার আন্ধারীঝাড় গ্রামের আব্দুল হাকিম জানান, পূর্বের কোন বকেয়া না থাকা সত্ত্বেও বকেয়া উল্লেখ করে তার নামে বিলসিট তৈরী করা হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সদুত্তর পাননি তিনি।

পূর্ব ভোটহাট গ্রামের ছলিম উদ্দিন বলেন, বিলে বড় রকমে অসঙ্গতি থাকায় বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা চলতি বছরের আগস্ট মাসের সাত’শ চার টাকার বিল সিট ছিঁড়ে ফেলে ১৭৮ টাকার নতুন বিলসিট ধরিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন বিদ্যুৎ অফিসের কারচুপি ধরতে না পেরে গ্রামের সহজ-সরল গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করেই যাচ্ছেন।

আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের বীর বারুইটারী গ্রামের আবু বক্করের ছেলে আব্দুল বারেক, খামার আন্ধারীঝাড় গ্রামের মোস্তাফিজার রহমান, লিটন শেখ সহ উপস্থিত গ্রাহকদের বিলসিটে মনগড়া ভাবে অপেক্ষাকৃত কম ইউনিট উঠানোর ফলে পরের মাসে বকেয়া ইউনিটগুলো যোগ করায় স্তর পরিবর্তন হয়েছে। এতে তাদেরকে বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।

একই রকম অভিযোগ করেন পাথরডুবি ইউনিয়নের ফুলকুমার গ্রামের নুরল ইসলাম। তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের স্বেচ্ছাচারীতার কারণে তাকে চতুর্থ স্তরের বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে প্রতি মাসেই।

এছাড়া তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের গোলজার হোসেন জানান, তার মিটার থেকে গত এপ্রিল ও মে মাসের বিল দু’বার করে আদায় করা হয়েছে। খামার আন্ধারীঝাড় গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র মাঈদুল ইসলামের অভিযোগ, তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পরেও প্রতিমাসে উক্ত মিটারের বিপরীতে বিলসিট পাঠানো হচ্ছে।

ভূরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের জিম্মি করে বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ, মিটার লাগানো ও ওয়ারিং বাবদ দফায় দফায় মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করছে সংঘবদ্ধ চক্রটি।

অভিযোগগুলো সম্পর্কে ভূরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম একেএম শফিউল আলম জানান, ব্যাংক থেকে ষ্টেটমেন্ট দেরিতে আসায় এরকম সমস্যা হতে পারে। অফিসে জনবল সংকটের কারণে বিভিন্ন সমস্যার তৈরী হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে অভিযোগ পেলেই সমস্যার সমাধান করছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এবিএন/আব্দুল মালেক/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ