আজকের শিরোনাম :

৬ দফা দাবীতে

চট্টগ্রামে সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাংবাদিক সম্মেলন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:০৬

বিআরটিএর ফিটনেস ও পারমিট নবায়নের নামে পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ।  হয়রানি বন্ধ এবং মটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ ২০১৭-২০১৮ আইন ১৯৮৩ সনের আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রুপটি।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিবহণ মালিক গ্রুপের মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ।
লিখিত বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে পরিবহণের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের অজুহাত দেখিয়ে মামলা ও টোকেন বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা জরিমানা আদায়ের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।

বলা হয় টিআইবির বার্ষিক রিপোর্টে দুর্নীতি সম্পর্কে বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা এক প্রকার ধামাচাপা দিতে উল্টো পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের উপর যে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আর তাতে করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ও হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবহণ মালিকের নেতৃবৃন্দরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক বিভাগের কিছু অসাধু সার্জেন্ট ও টিআই এর অযৌক্তিক মামলা মোকাদ্দমা ও টোকেন বাণিজ্যের হয়রানির শিকার হয়ে গণ পরিবহণের সাধারণ মালিক ও শ্রমিকরা সড়কে গাড়ি বের করতে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে পরিবহণ সংস্থার সংশ্লিষ্ট অনেকেই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়ে বর্তমানে অর্ধহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে।  হয়রানি অব্যাহত থাকলে অচিরেই দেশে পরিবহণ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনা তাদেরও কাম্য নয় জানিয়ে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন জেলা পরিবহণ মালিক গ্রুপ। নের্তৃবৃন্দরা বলেন, মটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ আইনে গাড়ির কাগজ পত্রাদি পরীক্ষা নিরীক্ষা হোক তাতে কোন আপত্তি নেই তবে মটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ ২০১৮ আইন জারি এবং তা দ্রুত বলবৎ হওয়ায় সারাদেশের পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ভুগছে। তাছাড়া আইনটি কার্যকর হলে পরিবহণ মালিকরা পরিবহণ ব্যাবসা  ও চালকরা তাদের পেশা ছেড়ে দিয়ে অনিশ্চিত অসহায় জীবন যাপন করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে মন্তব্য করেন জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপ।

সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া আইনটি ১৯৮৩ সনের আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুনভাবে আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি জানান। এসময় আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে দাবী মেনে না নিলে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সকল প্রকার গণ ও পণ্য পরিবহনের চাকা বন্ধ থাকার ঘোষণা দেন তারা।

৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে : (১) মটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ ২০১৭-১৮ আইন ১৯৮৩ সনের আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়ন করতে হবে। (২) বিআরটিএর ফিটনেস ও পারমিট নবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি বন্ধ এবং গণ পরিবহণ ও পণ্য পরিবহনে বিভিন্ন করসমূহের বৈষম্য দুর করতে হবে।

(৩) গাড়ির ইকোনমিক লাইফ এর অজুহাত দেখিয়ে ফিটনেস ও পারমিট নবায়ন বন্ধ রাখা যাবে না এবং কাগজপত্র বিহীন গাড়ী ছাড়া অন্য কোন গণ ও পণ্য পরিবহন টোকেন/ডাম্পিং করা যাবে না।

(৪) গণ পরিবহণ ও পণ্য পরিবহনের গাড়ীকে কেইজ স্লিপের মেয়াদ থাকা অবস্থায় পুনরায় মামলা দেওয়া যাবে না এবং মহাসড়কে ও উপসড়কে টেম্পু,সিএনজি থ্রী হুইলারসহ সকল অননুমোদিত গাড়ী সমূহ পুরোপুরি বন্ধ করিতে হবে।

(৫) সহজ শর্তে গাড়ীর ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে এবং (৬) গণ ও পণ্য পরিবহনের কাগজপত্র হালনাগাদ করার জন্য জরিমানা মওকুফসহ নুন্যতম ৬ মাস সময় দিতে হবে।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক পণ্য পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব মো. আবু মোজাফ্ফর, আন্ত:জিলা মালামাল পরিবহণ সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী জাফর আহম্মদ, মহানগর ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমির পারভেজ জনি,

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক কাভার্ডভ্যান ও মিনি ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাবুদ তালকদার, নোয়াখালি জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম শামিম, কুমিল্লা দাউদকান্দি ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বাদশা, কুমিল্লা জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর, কার্য নির্বাহী সদস্য সফিকুর রহমান ও ফেনী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. গোলাম নবীসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পরিবহণ সংস্থার নের্তৃবৃন্দরা।


এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ