আজকের শিরোনাম :

যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগে

রাজবাড়ী নার্সিং ইনষ্টিটিউটের অফিস সহকারীকে জুতাপেটা করলো ছাত্রীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪২

রাজবাড়ী নার্সিং ইনষ্টিটিউটের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, স্টাইপিনের টাকা কেটে নেওয়াসহ একাধিক অভিযোগে অফিস সহকারী মো. রফিকুল ইসলামকে জুতা পেটা করে জুতার মালা পড়িয়েছে ছাত্রীরা।

এ রফিকুল ইসলামের অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে গতকাল রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে জুতোপেটা করেছে শিক্ষার্থীরা।  পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করে।

৩য় বর্ষের ছাত্রী তাহেরা আক্তার রুমি জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল রফিকুল তাকে তার অফিস রুমে ডেকে নিয়ে প্রথমেই বলে আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি যে খানেই থাকো আমার সাথে যোগাযোগ করবে।  তাছাড়াও আরো অনেক বাজে বাজে কথা বলে। বলে আমি নাকি তার সাথে ফেসবুকে চেটিং করেছি কিন্তু আমার কোন ফেসবুক আইডিই নেই। এভাবেই তিনি মাঝে মধ্যেই আমাকে বিরক্ত করতো।

অন্যান্য ছাত্রীরা জানান, ‘অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের সোনা, জাদু, জান পাক্ষি বলে ডেকে কথা বলে।  তাছাড়ও শারীরিক অঙ্গ নিয়ে নানান অশ্লীল কথাবার্তা বলেন।  অনেক ছাত্রীকে তিনি তার বাসায় যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে।  আজ এক ছাত্রীকে বাজে প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে তাকে নিজ অফিস রুমে আটক করে জুতোপেটা করে তার গলায় জুতোর মালা পড়িয়েছি।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, ‘অফিস সহকারী রফিকুল ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।  রফিক দাবি করছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।  তবে আমরা অফিসিয়ালভাবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ ছালেহা বেগমের প্রশ্রয়ে রফিকুলের এমন কর্মকান্ড দিন দিন বেড়ে চলেছে।

রাজবাড়ী সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনছের আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  অভিযুক্ত রফিকুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. রহিম বক্স তাকে রেখে দেন। এ বিষয়ে তারা নাকি বিভাগীয় ব্যাবস্থা নিবেন।’

অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ৩য় বর্ষের ছাত্রী তাহেরা আক্তার রুমির ছবি দিয়ে একটি ফেসবুক আইডি খুলে আমার সাথে বন্ধুত্ব করে। পরে ম্যাসেনজারে সেও আমার সাথে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেছে আমিও বলেছি।  পরে আমি তাকে অফিসে ডেকে এনে বলি যে তুমি আমার সাথে রাতে চ্যাট করলে।  তখন সে বলে যে আমার ছবি দিয়ে আমার সাবেক বয়ফ্রেন্ডস এই আইডি খুলেছে।  আমি ওর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করায় সে এই কাজ করেছে।

৩য় বর্ষের একাধিক ছাত্রী জানান, প্রধান সহকারী মোঃ রফিকুল ইসলাম স্টাইপিনের টাকা দেওয়ার সময় প্রত্যেক ছাত্রীর কাছে ২০০শত টাকা কেটে নেয়।  তাছাড়াও তার কাছে যে কোন কাজে আসলেই তিনি আমাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করতো এবং আমরা বাধ্য হয়ে তা দিয়েছি।  রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক বছর আগে ইন্সট্রাকটর ইনচার্জ সালেহা মেডামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি।

এ বিষয়ে ইন্সট্রাকটর ইনচার্জ সালেহা বেগম বলেন, আমার কাছে এর আগে কোন ছাত্রী অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি।  তাছাড়ও স্টাইপিন এর টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়েও বলেনি।  

উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজবাড়ী নার্সিং ইনষ্টিটিউটের ছাত্রীর সংখ্যা ২১৯জন।

এবিএন/খন্দকার রবিউল ইসলাম/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ