আজকের শিরোনাম :

কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটে ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২১, ১৫:৫৪

নীলফমারী কিশোরগঞ্জ উপজেলাটি ৯টি ইউনিয়ন  নিয়ে গঠিত । এখানে প্রায় ৩ লক্ষাধিক  মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা হচ্ছে  ৫০ শয্যা বিশিষ্টি সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কাগজে কলমে  আট বছর ধরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য হলেও চলছে ৩১শয্যার জনবল ও চিকিৎসক দিয়ে। যার কারণে আউটডোরে ৩ থেকে ৪ শতাধিক রোগীকে ২ জন ডাক্তার  চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর রোগীদেরও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। সম্প্রতি গরমের মধ্যে অনেক রোগী ঘন্টার পর ঘন্টা  অপেক্ষা করে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে এই কমপ্লেক্সে কোন উন্নত চিকিৎসা মিলছে না , তাই ভেঙ্গে পড়েছে বর্তমান স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও জনবল দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় – হাসপাতালে ১ম শ্্েরনীর ২৯টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৪ জন,২য় শ্রেণীর ২৮ টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ২২জন, ৩য় শ্রেণীর ১৪২ টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৫৫জন, ৪র্থ শ্রেণীর ২৯টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১২জন।  এখানে  ১৪ জন ডাক্তার কর্মরত দেখানো হলেও জুনিয়র কনসালটেন্ট  এনেসথেসিয়া   প্রেষণা আছেন সদর হাসপাতালে এবং তিন জন  ডেপুটেশনে আছেন বিভিন্ন হাসপাতালে ।

এছাড়াও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি, জুনিযর কনসালটেন্ট মেডিসিন,  জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি, জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থোসার্জারী, জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু, জুনিয়র কনসালটেন্ট চক্ষু, জুনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি, জুনিয়র কনসালটেন্ট চর্ম ও যৌন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও এখনে কোন কনসালটেন্ট ডাক্তার নেই। কয়েক বছর আগে  সরকার এ উপজেলার  জনগণের   স্বাস্থ্য সেবা  নিশ্চিত করতে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নত করেছেন। কিন্তু প্রয়েজনীয় চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে সরকারের এ মহৎ উদ্দেশ্য ভেসতে যেতে বসেছে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই বিশাল জনগোষ্ঠি।

অটির জন্য এ্যানসথেসিয়া মেশিন  এক্স রে মেশিন ,ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম ,এসি রয়েছে।বেবি-ইনকিউবেটর মেশিনসহ ফটো থেরাপি মেশিনও আছে। ৫০ টি বেড ও ৫০ টি ডাইড চালু আছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল পরিপূর্ণ থাকলে প্রসূতির সিজারের জন্য রংপুর বা নীলফামারী যেতে হতো না।

হাসপাতালটির  বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি  রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  হাসপাতালে  চিকিৎসক সংঙ্কট ও  রোগ নির্ণয়ে  পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে  হচ্ছে । নারী ও শিশু ওয়ার্ডের আবস্থা আরো লাজুক। হাসপাতাল থেকে কয়েকটা ওষুধ পাওয়া গেলেও বাকি সব ঔষুধ বাহির থেকে ক্রয় করতে হয়। রোগীর সংখ্যা বেশি থাকলেও বেড সংঙ্কটের কারণে রোগীদের হাসপাতালের  মেঝেতে  শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে  হয়। দুর্ভোগ শেষ নেই চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের।     

উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বারী পাইলট বলেন-– আমাদের উপজেলার মানুষ অত্যন্ত গরীব ও অসহায় । তাদের বেশির ভাগই সরকারী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকনে । কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসক  ও টেকনিশিয়ানের সংঙ্কটের  কারণে রোগীরা সেই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।তাই উপজেলা বাসীর সুবিধার্থে  সুচিকিৎসার  জন্য  উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা  ডাঃ মোঃ আবু শফি মাহমুদ  জানান- হাসপাতালে দৈনিক ৪-৫শ’ রোগীর চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কাগজে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থাকলেও চলছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। ওয়ার্ড বয় আছে শুধূই একজন। যেটুকু জনবল আছে তা দিয়েই আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারপরেও আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে অনেক সময় হিমশিম খাচ্ছি। রোগীদের চাপ সামলাতে সব শূণ্য পদের চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।তবে আশা করি অচিরেই নিয়োগ হলে  রোগীদের আরো উন্নত সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে ।


এবিএন/আব্দুর রউফ হায়দার/জাসম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ