আজকের শিরোনাম :

চিলমারীতে বনায়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩১

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে স্থানীয় বনবিভাগ কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে বনায়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।  প্রকল্প এলাকায় নামে মাত্র কিছু চারা রোপন করে প্রায় ১৩লাখ টাকা সমুদয় আত্মসাতের পায়তারা করছেন তিনি।

জানা গেছে, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় চিলমারী উপজেলায় ২০ কি.মি. রাস্তার দুই ধারে বনজ, ফলজ ও ভেষজ প্রজাতির গাছ লাগানো প্রকল্পের বরাদ্দ পায় বনবিভাগ।  সুত্রমতে চিলমারী পেট্রলপাম্প মোড় থেকে জলিল চেয়ারম্যানের বাড়ী হয়ে রাণীগঞ্জ পর্যন্ত এবং নরশিংভাজ এলাকার পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি রাস্তা মিলে ২০কি.মি. রাস্তা এ প্রকল্পের আওতায় পরে। প্রকল্পের হিসাব অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটারে ১ হাজার চারা হিসাবে ২০কিলোমিটার রাস্তায় ২০ হাজার চারা রোপন করতে হবে। 

নার্সারী হতে উত্তোলন করতে প্রতি হাজার চারা ৫ হাজার টাকা হারে মোট ১লাখ টাকা এবং নার্সারী থেকে পরিবহন করে রাসায়নিক ও গোবর সারসহ রোপন পর্যন্ত প্রতি হাজার চারা অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারে ব্যায় ১২হাজার টাকা হারে মোট ২লাখ ৪০হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে বনজ চারা ৬৫%, ফলজ চারা ২৫% ও ভেষজ চারা ১০% লাগানোর শর্ত রয়েছে যা ৩০জুন ২০১৮ এর মধ্যে শেষ করতে হবে।  চারা রোপনকৃত এলাকায় প্রতি কিঃমিটারে ১জন পাহারাদার রাখারও নিয়ম রয়েছে যার বেতন মাসিক ২হাজার টাকা হারে ২৪মাস পর্যন্ত।  ২০ কি.মি. রাস্তার জন্য ২০জন পাহারাদারের বেতন বাবদ মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ৯লাখ ৬০হাজার টাকা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, পেট্রলপাম্প মোড় থেকে জলিল চেয়ারম্যানের বাড়ী হয়ে রাণীগঞ্জ পর্যন্ত প্রকল্প দেখানো হলেও বাস্তবে কোন চারা লাগানো হয়নি। নরশিংভাজ (ঠকেরহাট) বাজার থেকে নজির হোসেনের বাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১কি.মি., কাদের ফকিরের বাড়ী থেকে ফকিরেরভিট পর্যন্ত প্রায় ১কিঃমিঃ এবং নজির হোসেনের বাড়ী থেকে অধিকারী পাড়া পর্যন্ত প্রায় আধা কিঃমিঃ রাস্তার দু’ধারে চারা লাগানো হলেও দেয়া হয়নি কোন সার এমনকি বনজ,ফলজ ও ভেষজের অনুপাতও মানা হয়নি। 

পরিচর্যা ও সেচের অভাবে সে চারাগুলি ইতোমধ্যে মরে গেছে। সব মিলে ২০কিঃ মিঃ প্রকল্পের মধ্যে মাত্র প্রায় ৩ কিঃ মিঃ রাস্তায় নামে মাত্র চারা লাগিয়ে প্রকল্পের সমুদয় টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। অপরদিকে কাগজে-কলমে ২০জন পাহারাদারের নিয়োগ দেখানো হলেও বাস্তবে প্রকল্প এলাকায় কাউকে দেখা যায়নি। নরশিংভাজ এলাকার মজিবর রহমান(৫৫),লিটন মিয়া(৩০), মাহফুজার রহমান(৪০)সহ অনেকে জানান,বনবিভাগ থেকে এ এলাকায় কিছু ইউক্লিপটাস গাছের চারা লাগানো হলেও তা পরিচর্যার কোন লোক দেখা যায়নি। 

চিলমারী বনবিভাগে কর্তব্যরত ফরেষ্টার মোঃ ফজলুল হক গামার সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বুধবার দুপুর ১২টায় অফিসে গেলে তার কক্ষ তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। 

এব্যাপারে বনবিভাগ চিলমারী রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ জেড এম ইকবাল হুসাইন খান বলেন, চিলমারী প্রকল্পের কাজ ফজলুল হক গাম নিজে করছেন। গত তিন মাস ধরে আমি নিজেও তাকে বলছি আস্তে আস্তে প্রকল্পের কাজ শেষ করেন। কিন্তু তিনি অন্য কাউকে প্রকল্পের কাজে লাগাচ্ছেন না বিশ্বাসও করছেন না। কোন কথা বললে তিনি উল্টো বলেন আমি কাউকে ভয় করি না।

এবিএন/গোলাম মাহবুব/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ