আজকের শিরোনাম :

মাদারীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:১৪

মাদারীপুর সদর উপজেলার ৩৯নং ছিলারচর আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে দিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। আতঙ্কের মুখে প্রায় দুইশতাধিক শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন, যা অনেক আগেই ব্যবহারের অনউপযোগী হয়ে পরেছে।  বিদ্যালয়ে আলাদা কোন ভবন না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রায় দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে ঝুঁকির মধ্য দিয়েই দীর্ঘদিন নিয়মিত ক্লাস করতে হচ্ছে। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৩০ সালে শুরু হওয়া ৩৯নং ছিলারচর আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে একটি ৪ কক্ষের নতুন ভবন নির্মান করা হয়। নির্মাণের ১৫ বছরের মধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়।  বর্ষার সময় একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ক্লাস রুমগুলো ভিজে যায়।  এ কারনে বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। 

তাছাড়া অভিভাবক তাদের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছে।  সমাপনিতে শতভাগ পাশ করা স্কুলটি ভবনের কারণে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে এবং শিক্ষার সকল কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে।  এছাড়াও বিদ্যালয়ে প্রায় ২শত ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও শিক্ষক রয়েছে ৪জন, তার মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে একজন শিক্ষক বদলী হয়েছেন, একজন রয়েছে ছুটিতে, মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

৪র্থ শ্রেণির একাধিক ছাত্রীরা জানান, আমাদের এই গরমে ক্লাস করতে অনেক কষ্ট হয়।  আমাদের ক্লাসে কোন ফ্যান নাই।  আমরা দ্রুত নতুন একটি ভবন চাই।  ৩য় শ্রেণির ছাত্রীরা জানান, ‘ছাদের বালু সিমেন্ট (প্লাস্টার) খসে গায়ের ওপর পড়ে।’ আমরা সবসময় ভয়ে ভয়ে ক্লাস করছি। আমাদের সঠিক পড়াশুনা করার ব্যবস্থা যেন সরকার করে দেয়।  ৫ম শ্রেণির একাধিক ছাত্ররা বলেন, সরকারের কাছে একটাই দাবি আমরা একটি নতুন ভবন চাই। আমরা ভালমত পড়াশুনা করতে চাই। আমরা এই দেশকে একটি সুন্দুর দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই।

৩৯নং ছিলারচর আউলিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আক্তার জানান, আলাদা কোন  ভবন না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই লাইব্রেরী ও প্রধান শিক্ষক, শিক্ষকদের লাইব্রেরী হিসাবে ব্যবহার করছি।  এর আগে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের এই বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নিয়েছে।  আমাদের বিদ্যালয় অনেক বছর ধরে শতভাগ পাশ সহ জিপিএ ৫ পেয়ে আসছে।  তাই সরকারের কাছে জোর দাবি আমরা এ স্কুলে একটি সুন্দর ভবন চাই। যেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নির্বেঘ্নে আনন্দের সাথে পড়াশুনা করতে পারবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট মো: সাইয়েদুল হক নান্নু মিঞা ও এলাকাবাসীরা জানান, ছাত্র-ছাত্রীর তুলনায় ক্লাসরুম কম, টেবিল বেঞ্চের সংকট, এই গরমে শিক্ষকরা হাত পাখা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছে।  ছাত্র-ছাত্রীরাসহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা গরমে অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  তাছাড়া শিক্ষকের সংকট রয়েছে।  বিদ্যালয়ের ঝুকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান হচ্ছে।  আমাদের এই স্কুলের নতুন একটি ভবন নির্মাণ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।  সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন জরুরি ভিক্তিতে আমাদের স্কুলে নতুন একটি ভবন যেন দেয়া হয়।

মাদারীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুবিনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের সমস্যার কথা আমি আগে জানি নাই খোজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবো। তবে আমি চেস্টা করবো যথাশীঘ্র কিছু একটা করার। 

মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আজাহারুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের যে ফলাফল অত্যান্ত ভালো, তবে বিদ্যালয়ে নতুন কোন ভবন নেই, আমরা অতি শীঘ্রই চেস্টা করবো বিদ্যালয়টির নতুন একটি ভবন নির্মানের, যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার কোন প্রকার সমস্যা না হয়।

এবিএন/সাব্বির হোসাইন আজিজ/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ