আজকের শিরোনাম :

সুনামগঞ্জে তিনটি উপজেলার শ্রমিকদের একমাত্র ভরসা যাদুকাটা নদী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১০:০৫

সুনামগঞ্জের হাওর বেষ্টিত তাহিরপুর অঞ্চলের অসহায়দের ভরসা একমাত্র নদী যাদুকাটা। এ নদী থেকেই বালু উত্তোলন করে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার শ্রমিকের তিন বেলার আহার জুটে।

যাদুকাটা বালু মহাল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েন শ্রমিকেরা। একদিকে করোনা সংকট অন্যদিকে মহাল বন্ধ থাকায় শ্রমিকের চোখে মুখে নেমে আসে অন্ধকার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়া হচ্ছে মহাল।

এ খবরে খুশিতে শ্রমিকেরা নতুন করে পথ চলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এ অবস্থায় উচ্চ আদালতে রিট করায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে কর্মসংস্থান। সচেতন মহল বলছেন যাদুকাটা নদী বন্ধ হলে কর্মসংস্থান হারাবে কয়েক হাজার মানুষ। লাথি পড়বে শ্রমিকের পেটে।

বালু উত্তোলন করে পেটের আহার এবং ছেলে মেয়েদের নিয়ে একমুঠো অন্য জোগানোর জন্য গত মঙ্গলবার হাজার হাজার শ্রমিক নদীর তীরে এসে মানববন্ধনে জড়ো হন।

লাউড়েরগড়, ঘাগটিয়া, বাদাঘাট, শাহিদাবাদ, বারিকটিলা, শিমুলতলাসহ যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী প্রায় ৩০টি গ্রামের হাজার হাজার নারী-পুরুষরা নদীরচরে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

মানববন্ধনে শ্রমিকরা বলেন, প্রায় দু’বছর ধরে যাদুকাটা নদীতে আমরা কাজ করতে পারছি না। আমাদের ঘরে ভাত নাই। কাজ করতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছেন। এ নদীতে তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুরের প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক যুক্ত আছেন। পাশাপাশি এই বালু ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন এলাকায় হাজারো ছোট-বড় ব্যবসায়ী।

এদিকে যাদুকাটা নদীটি বালুতে ভরাট হয়ে আশপাশের আমন ও বোরো ফসলের জমি বালু ভরাট হয়ে যাওয়ায় অনেকেই আমন ও বোরো জমি চাষাবাদ করতে পারছেন না।

যাদুকাটা নদীর পাড়ের একজন কৃষক জানান, যদি প্রতি বছর বালু তোলা হতো তবে আমরা এই বালুর কড়াল গ্রাস থেকে মুক্তি পেতাম। তাই অবিলম্বে পাহাড় থেকে আসা বালু উত্তোলন করে ফসলী জমি রক্ষার জোড় দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, যাদুকাটা নদীর বালু উত্তোলন করে সরকার যেমন লাভবান হবে, ঠিক তেমনি আমাদের ফসলী জমি রক্ষা করা সম্ভব হবে। না হয় হয় যে ধান আমরা পেতাম সেটা থেকে আমরা বঞ্চিত হবো। সরকার প্রতিবছর অন্তত ১০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান মানববন্ধনে। অবিলম্বে  এই বৈধ ইজারা পাওয়া নদীতে শ্রমিকদের কাজকর্মের সুযোগ সৃৃষ্টি করে দিতে সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জসিম উদ্দীন বলেন, গত বছর মামলার কারণে এসব বালুমহাল ইজারা হয়নি। এবার আমরা সব প্রক্রিয়া স¤পন্ন করেছি। কিন্তু আদালতের আরেকটি আদেশের কারণে এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ থেকে আপিল করা হবে। বিষয়টি নিষ্পত্তি হলেই বালুমহালগুলো খুলে দেওয়া হবে।

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ