আজকের শিরোনাম :

সালথায় তান্ডবের ঘটনায় আরো চার মামলা: আসামি ১৭ হাজার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৪০

আজ শুক্রবার দুপুর ২ টায় ফরিদপুর সালথা উপজেলায় তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন সরকারি অফিসের ধ্বংস্তুপ ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, কোনো বক্তব্য নয়’ সরাসরি এ্যাকশনে যেতে চাই।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: আলিমুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো: ওয়াদুদ মাতুব্বর, সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ হাসিব সরকার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা পরিতোষ বাড়ৈ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া প্রমুখ।  

এদিকে তা-বের ঘটনায় নতুন করে আরো চারটি মামলা দায়ের হয়েছে। আগের মামলাসহ মোট পাঁচ মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৭ হাজার জনকে। মোট পাঁচটি মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৬ হাজার ৮ শতাধিক জনকে। পুলিশ এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৮ জনকে আটক করেছে।

নতুন চার মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদী হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু মাতুব্বর। তার মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরো ৭ থেকে ৮ শতাধিক জনকে আসামি করা হয়েছে। ইউএনওর গাড়িচালক মো. হাশমত আলী আরেকটি মামলা করেছেন। তার মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার ব্যক্তিকে। উপজেলা সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী সমীর বিশ্বাসও একটি মামলা করেছেন। তার মামলায় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার ব্যক্তিকে। অপর একটি মামলাটি করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনারের গাড়িচালক মো. সাগর সিকদার। তার মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার ব্যক্তিকে। এর আগে বুধবার সালথা থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা প্রথম মামলাটি দায়ের করেন।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা জানান, সালথায় তা-বের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ জন দুই দিন করে রিমান্ডে রয়েছেন।

উল্লেখ্য গত ৫ এপ্রিল ২০২১ সোমবার সন্ধ্যায় করোনা মোকাবিলায় কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করতে দুই আনসার সদস্য ও ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণি ফুকরা বাজারে যান। সেখানে তিনি যাওয়ার পর মানুষের জটলা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় তিনি ওই স্থান থেকে ফিরে আসেন এবং সেখানে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পাঠান। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজিত জনতা এসআই মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালান। এতে তার মাথা ফেটে যায়।

পরে স্থানীয় জনতা পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত ও বাহিরদিয়া মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা আকরাম আলী এবং জনৈক আরেক মাওলানার গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে দেয়। গুজবে কান দিয়ে হাজারো মানুষ এসে থানা ঘেরাও করে। সেই সঙ্গে উপজেলা পরিষদ, থানা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেস্ক, উপজেলা কৃষি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি  আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সালথায় কর্মরত এক সাংবাদিকের মোটর সাইকেলে আগুন দিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সালথা উপজেলা সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহতদের মধ্যে জুবায়ের হোসেন (২৫) ও মিরান মোল্যা (৩৫) নামের দুই যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।    

এবিএন/কে এম রুবেল/জসিম/জুয়েল

এই বিভাগের আরো সংবাদ