আজকের শিরোনাম :

চিতলমারীতে দলীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে জনপ্রতিনিধিদের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২১, ১৮:৪০

বাগেরহাটের চিতলমারীতে হাট-বাজার ইজারার দরপত্র জমাকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় ২৪ ঘন্টা পার হলেও মামলা হয়নি। তবে গালিগালাজ ও হুমকির ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

গতকাল বুধবার (৩১ মার্চ) রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান থানায় হাজির হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম অহিদুজ্জামান ও চিতলমারী উপজেলা মহিলা যুবলীগের বর্তমান সভানেত্রী শিবানী বিশ্বাসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে এ জিডি করেন। এ সময় কয়েকশ’ নেতাকর্মি থানার সামনে ও উপজেলা চত্ত্বরে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উপজেলা পরিষদের সামনে বসে চেয়ারম্যানকে গালিগালাজের প্রতিবাদে জনপ্রতিনিধিগন এক জরুরী সভা করেছেন। বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবেরা কামাল স্বপ্না, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ানম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারী এস এম অহিদুজ্জামানের শাস্তির দাবি করেন।

সভায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, একাত্তরের পর এই চিতলমারীতে আমরা হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান কাধে কাধ মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছি। এই অহিদ গ্রুপটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করিয়ে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করছে। অহিদুজ্জামানের নেপথ্যনায়করা মিলে দলীয় সম্প্রীতি ধংষের পরিকল্পনা করছে। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় সম্প্রীতি নষ্টকারী এস এম অহিদুজ্জামানের শাস্তির দাবি করছি।

সভায় ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মাহাতাবুজ্জামান বলেন, একটি কুচক্রী মহল সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে যার যার উদ্ধেশ্য হাসিলের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের কেউ আগে এই উপজেলা পরিষদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা ধর্মীয় আঙ্গিকে সুড়সুড়ি দিয়ে আমাদের চিতলমারীকে অশান্ত করতে চাচ্ছে। তারা কিছু দিন হলো মাঠে নেমেছে। ওরা ‘অনদা ওয়েতে’ আছে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

সভায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবেরা কামাল স্বপ্না বলেন, চিতলমারী উপজেলা মহিলা যুবলীগের সভানেত্রী শিবানী বিশ্বাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালের সাথে যে অশোভন আচরণ করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে শিবানী বিশ্বাসকে দল থেকে বহিস্কারসহ তার বিচার দাবি করছি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওহিদুজ্জামান খলিফা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, খাসেরহাট বাজারের দরপত্রটি স্থানীয় ভাবে সমঝোতার কথা ছিল। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছিলাম। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের ইন্ধনে গৌতম  বিশ্বাস দরপত্র জমা দেয়। এ কারণে আমি গৌতম বিশ্বাসকে দুটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছি, এর বেশিকিছু ঘটেনি।

এ ব্যপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ ও জীবন নাশের হুমকির ঘটনায় থানায় ১১৯০ নং একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। বিষয়টি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিটন আলী বলেন, উপজেলা পরিষদের মধ্যে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল তা আইন-শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়াও চলছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঠিকাদার রনজিত কুমার বাড়ইয়ের পক্ষে খাসেরহাট বাজার ইজারার দরপত্র জমা জমা দেয় গৌতম কুমার বিশ্বাস। এ সময় উপজেলা পরিষদ ভবন থেকে মারতে মারতে উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে নিয়ে যায় ওহিদুজ্জামান খলিফা ও তার লোকজন। সেখানে আরেক দফায় মুগুর ও কোদালের আছাড়ি দিয়ে গৌতমকে বেধড়ক মারপিট করে তারা। পরে উপজেলা পরিষদের সামনে এসে উপজেলা চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালের নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এস এম অহিদুজ্জামান। চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন প্রতিবাদ করলে তাকেও গালিগালাজ করে অহিদুজ্জামান।

এবিএন/এস এস সাগর/জসিম/জুয়েল

এই বিভাগের আরো সংবাদ