আজকের শিরোনাম :

‘আমনেরা সরকার’রে কন, এমপিরে কন, আমাগো লইগ্যা কিছু করতে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৮

‘আর কিছু নাই যে ভাঙবে, যা আছিল সব লইয়্যা গেছে তেতুইলায় (তেঁতুলিয়ায়)। চাইরবার ঘর ভাঙছে, জমি ক্ষেত, হালের বলদ সব শ্যাষ এহন আর কিছুই নাই। রাস্তার পাশে ঝুপড়ি বানাইয়া পোলাপান লইয়া কোনোমতে আছি।এই রাস্তাও মনে হয় টেকবেনা। এরপর কই যামু আমরা? আমনেরো সরকার’রে কন, এমপিরে কন আমাগো লইগ্যা কিছু করতে। এ

ভাবেই কান্না জড়িত কন্ঠে কথা বলছিলেন তেতুঁলিয়ার ভাঙনে গৃহহীন জালাল মিয়া (৪৫)। শুধু জালাল মিয়াই নয় এমনই আর্তনাদ আজ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেতুঁলিয়া পাড়ের সাধারন মানুষের। 


তেতুঁলিয়া নদীর সর্বগ্রাসী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার ধূলিয়া ইউনিয়নের সাধারন মানুষ। ভাঙনে সব থেকে বেশি ক্ষত্রিগ্রস্থ হচ্ছে ধূলিয়া ইউনিয়নের ধূলিয়া পুরান বাজার, নতুন বাজার, বারদিপাড়া, উত্তর ঘুচরাকাঠি ও মঠবাড়িয়া অংশ। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক ঘর বাড়ি। ধূলিয়া-হোসনাবাদ সড়কটির একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ধূলিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষ।

তেতুঁলিয়ার এই অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে ধূলিয়া দাখিল মাদরাসা, ধূলিয়া এনকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঠবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উপাসানালয়। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে ভাষা সৈনিক সৈয়দ আশরাফের সমাধিস্থল। 
ধূলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রব বলেন, এই ভাঙন এভাবে অব্যহত থাকলে অচিরেই ধূলিয়া বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি ৩টি মসজিদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই গৃহহীন হচ্ছে এখানকার মানুষ। অচিরেই এই ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান তিনি।


তেতুঁলিয়া নদীর ভাঙনরোধে করনীয় সম্পর্কে বাউফল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা পিযূষ চন্দ্র দে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাৎক্ষনিকভাবে এই ভাঙন রোধে দুই কিলোমিটার এলাকায় ব্লক ফেলা গেলে সুফল পাওয়া যেত। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি।  
কিন্তু এই ভাঙন রোধে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেন নি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটুয়াখালী জেলা নির্বাহি প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান।

তিনি জানান, ধূলিয়ায় ভাঙন রোধে আমাদের একটি প্রস্তাবনা দেয়া আছে। এই প্রকল্প অনুমোদন হলে এর কাজ শুরু করা যাবে। দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রকল্পের কথা শোনা যাচ্ছে কিন্তু এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমীক্ষা সহ আরো কিছু কাজ রয়েছে, এরপর প্রস্তাবনা যাবে মন্ত্রনালয়ে সেখান থেকে একনেকে। একনেকে পাশ হওয়ার পর কাজ শুরু করা যাবে।

এবিএন/মোঃ দেলোয়ার হোসেন/জসিম/নির্ঝর

এই বিভাগের আরো সংবাদ