আজকের শিরোনাম :

বালিয়াডাঙ্গীতে বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার (স্লীপের) টাকার ব্যাপক অনিয়ম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৪৭

বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বা স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্যান্ট (স্লীপ) এর টাকা হরিলুটে পরিনত হয়েছে।  অনেক স্কুলে টাকা উত্তোলনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজ করা হয়নি।কোন কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাম মাত্র কাজ করে দায় সেরেছে।  আবার কোন কোন প্রধান শিক্ষক  জোড়া তালি দিয়েই টাকা হজম করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঠাকুরগাওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ১শ ৩৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।  এসব বিদ্যালয় গত অর্থ বছরে ৪০ হাজার করে স্লীপের টাকা বরাদ্দ পায়।  এতে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫লক্ষ ২০হাজার টাক।  বরাদ্দের সমুদয় টাকা পাওয়ার দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজই শুরু করেননি ভানোর দীঘিপাড়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৌলা দোগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রুপগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।  অথচ সকল বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে গত ৩০ জুনের মধ্যে।  জানা গেছে, দাপ্তরিক নির্দেশনা ছিল নিজেদের টাকা দিয়ে ৩০ জুনের মধ্যে সকল প্রতিষ্ঠানে কাজ সম্পাদন করে বিল উত্তোলন করার।এ নির্দেশনা মানা হয়নি।

অন্যদিকে, কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু হলেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, স্লীপের টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর যাচ্ছে তাই করে চলেছে।  অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ৪২ নং গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ৪০হাজার টাকা বরাদ্দ পায়।  বরাদ্দ পাওয়ার পর উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মসলিমউদ্দীনের বিরুদ্ধে গত ১৬ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্লীপের টাকা আত্মসাৎতের লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরান আলী।

অভিযোগে জানা গেছে, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা ভাবে কাজ সেরেছেন।  প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি করে সমাবেশ বেদী নির্মাণ বাধ্যতামুলক করা হয়।  তার বিপরীতে ১০হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।এই সমাবেশ বেদী নির্মানে নতুন ইট ব্যবহার না করে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুরাতন ইট অথ্যাৎ পূর্বে ব্যবহৃত ইট ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়লের প্রধান শিক্ষক মসলিমউদ্দীন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নহে।  অন্যান্য বিদ্যালয় সমাবেশ বেদী দুই নম্বর ইট দিয়ে করলেও আমি এক নম্বর ইট দিয়ে করেছি।

এ বিষয়ে লালাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন স্লীপের টাকার ভাগ বিভিন্ন যায়গায় দিতে হয়।স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরাও এতে ভাগ বসায় এবং আমাকেও দিতে হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, ঢালাও ভাবে সব প্রতিষ্ঠানে এ অভিযোগ সত্য নয়। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষক এ বিষয়ে জড়িত মর্মে শুনেছি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, গত অর্থ বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পাদন করে বিল তোলার কথা।কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান নানা জটিলতার কারণে কাজ করতে পারেনি বলে আমি শুনেছি।  তবে সরকারি নির্দেশনা ছিল নিজেদের টাকায় ৩০জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে টাকা উত্তোলন করার।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামশুল আলম জানান, নিম্নমানের পুরাতন ইট দিয়ে সমাবেশ বেদী নির্মানের একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেনি তাদের তাগাদা দেয়া হয়েছে।

এবিএন/মো: রমজান আলী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ