আজকের শিরোনাম :

চিতলমারীর চিত্রা নদীতে দুইশতাধিক পয়ঃবর্জ্যরে লাইন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১৩

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দু’পাড়ে কমপক্ষে দুইশতাধিক পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওয়াতায় এ নদী ও ক্যানেলটির খনন কাজ চললেও পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার ড্রেন অপসারণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাবে বলে পরিবেশবিদরা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে ৩ টি নদীসহ ৫৫ খালের খনন কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। বেশীর ভাগ খাল ও নদী খনন হলেও বর্তমানে চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের খনন কাজ চলছে। কিন্তু শুধু উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মরা চিত্রা নদী হক ক্যানেলের দু’পাড়ে কমপক্ষে দুইশতাধিক পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে।

যা ভয়াবহ ভাবে পরিবেশকে দূষণ করছে। খাল খননের সাথে সাথে ওই সমস্ত পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় নদীর ও ক্যানেলের দু’পাড়ের বাসিন্দারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই পরিবেশবিদরা মনে করছেন নদী ও খাল থেকে পরিবেশ দূষণকারী এই পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করলে সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাবে।

চিত্রা পাড়ের বাসিন্দা সুবল কর্মকার, মরু দুলাল বিশ্বাস, গৌরাঙ্গ বিশ্বাস, রুপালী বেগম, গাউছ গাজিসহ অসংখ্য মানুষ জানান, খাল খননের শুরুতে তারা প্রাণের স্পন্দন দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ এই পানি আর ব্যববহার যোগ্য থাকছে না। এছাড়া অনেকে তাদের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা এ খালে ফেলছে। তাদেরও কেউ বাধা দেয়ার নেই। স্কুল শিক্ষক মোঃ সাফায়েত হোসেন, সাংবাদিক দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, এ গুলো অপসারণ ও বন্ধে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এ উপজেলার মানুষের সীমাহীন পানির কষ্ট রয়েছে। তাছাড়া যারা পরিবেশ দূষণ করছে তারা অপরাধ করছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) খুলনা বিভাগীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসিনতার কারনে এ জাতিয় পরিবেশ বিধংসী কর্মকান্ড চলছে। যার কারণে পরিবেশ প্রতিবেশ চরম হুমকির মুখে। অবিলম্বে এসকল কর্মকান্ড বন্ধের জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাবে।

এ ব্যাপারে জানতে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তাকে বারবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম বলেন, পরিবেশকে হুমকীর মুখে ফেলা কাজ যে কাউকে মর্মাহত করে। যারা এ ধরণের কাজের সাথে জড়িত তাদের নদী ও খাল দূষণ না করার জন্য অনুরোধ করছি। না হলে আমরা পরিবেশ দূষণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করব।

এবিএন/এস এস সাগর/জসিম/জুয়েল

এই বিভাগের আরো সংবাদ