দুর্নীতির দায়ে সাদুল্লাপুরের ইউপি চেয়ারম্যানকে স্থায়ী বরখাস্ত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৪১ | আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:২১
প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় নয়ছয় ও দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে অবশেষে চুড়ান্তভাবে অপসারণ (স্থায়ী বরখাস্ত) করা হয়েছে। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান পদটি শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু জাফর রিপন স্বাক্ষরিত জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারী) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, নিয়মনীতির ব্যতয় ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকায় অনিয়ম ও সুবিধাভোগীদের নিকট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৪ জুন চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। যেহেতু সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান কৃর্তৃক প্রদত্ত শোকজ নোটিশের জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪ (ঘ) ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে তাকে চেয়ারম্যানের পদ হতে অপসারণ করা হলো। একই সঙ্গে ৩৫ (২) ধারায় তার পদটি শূন্য ঘোষণা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য ইউএনও’কে নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রজ্ঞাপনটি এখনো দপ্তরে পৌঁছেনি বলে জানান সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নবীনেওয়াজ। প্রজ্ঞাপনের কপি হাতে পেলেই পদটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা জানান তিনি। এরআগে, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম-নয়ছয় ছাড়াও চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান তার স্ত্রী-মেয়েসহ ব্যক্তিগত সহকারীর মোবাইল নাম্বার ব্যবহার এবং উপকারভোগীদের কাছে অর্থ আদায়ের ঘটনায় গত ৯ জুন সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে গত ১৬ জুন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠায়।
পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (গত ২৪ জুন ২০২০) অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। একই সঙ্গে কেন তাকে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবেনা, তার জবাব ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়। উল্লেখ্য, খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের প্রকৃত কর্মহীন ও দুস্থ-অসহায়দের বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় ৫৯৪ জনের নাম অর্ন্তভুক্ত করেন চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী।
কিন্তু তালিকাতে সুবিধাভোগীর নামে পাশে স্ত্রী-মেয়ে ও ব্যক্তিগত সহকারী রাজ্জাকের একাধিক মোবাইল নাম্বার জুড়ে দেয়াসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং বিত্তশালীদের নাম অন্তভুক্ত করেন তিনি। শুধু তাই নয়, চা-পান খাওয়াসহ নানা অজুহাতে সুবিধাভোগী অনেকের কাছে ৪০০ থেকে ৫০০টাকা করে হাতিয়ে নেয় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এদিকে, সাময়িক বরখাস্তের পর থেকেই এলাকাতে দেখা যায়না আরিফুর রহমানকে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিএন/আরিফ উদ্দিন/জসিম/জুয়েল
এই বিভাগের আরো সংবাদ