আজকের শিরোনাম :

ভাগিয়ে নেয়া রোগী ফের যশোর জেনারেল হাসপাতালে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০১৮, ১৬:০০

যশোর, ২০ আগস্ট, এবিনিউজ : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাইভেট হসপিটালে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়া রোগী হাফিজুর রহমানকে (২৮) আবারো সরকারি সেই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাঝে প্রাইভেট হসপিটালে রোগীর দুইবার অপারেশন ও চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অথচ প্রথমে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর ওই রোগীকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিলো।  স্বজনরা জানিয়েছেন, পরে রেফার্ড করা চিকিৎসকই যশোরের একটি প্রাইভেট হসপিটালে রোগীর অপারেশন করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থা গুরুতর। তবে ওই চিকিৎসক এবার সরকারি হাসপাতালেই রোগীর অপারেশন করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

হাফিজুর রহমান যশোরের শার্শা উপজেলার সমন্ধকাঠি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। স্বজনরা জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান একজন লাটা-হাম্বার (ইঞ্জিন চালিত যান) চালক। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন।

গুরুতর অবস্থায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় আঘাতে তার ডান পা ভেঙ্গে যায়। ওই সময় অর্থোপেডিক বিভাগে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার আনম বজলুর রশিদ টুলু ওই রোগীকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন। 

তিনি রোগীর স্বজনদের জানিয়েছিলেন, সরকারি এই হাসপাতালে হাফিজুর রহমানের অপারেশন সম্ভব নয়। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। এসময় ডা. টুলু হাসপাতালের এক কর্মচারীকে লেলিয়ে দেন রোগীর লোকজনকে ম্যানেজ করার জন্য । 

ওই কর্মচারী জানিয়েছিলেন, ঢাকায় যাওয়ার দরকার নেই। অনেক অর্থ ব্যয় হবে। যশোরেই রোগীর অপারেশন সম্ভব। টুলুর স্যারের ব্যক্তিগত চেম্বারে যোগাযোগ করেন। এভাবে রোগীকে একটি প্রাইভেট হসপিাটালে ভাগিয়ে নেয়া হয়। 

রোগীর স্বজনরা আরো জনান, প্রাইভেট হসপিটালে যাওয়ার পরেই ডা. বজলুর রশিদ টুলু রোগীর অপারেশন করেন। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় কয়েকদিন পরে আবারো অপারেশন করা হয়।

দুইবারের অপারেশন ও চিকিৎসা বাবদ ডা. টুলুু তাদের কাছ থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়া হসপিটালের বিল ও ওষুধ কেনা বাবদ ব্যয় হয় আনুমানিক ২৮ হাজার টাকা। রোগীর স্ত্রী কাকলী খাতুন জানান, দুইবারের অপারেশনেও তার স্বামী হাফিজুর রহমানের পা ভালো হয়নি। ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনের কারণে পায়ের অবস্থা এখন গুরুতর। 

রোগী হাফিজুর রহমান জানান, শারীরিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ১৩ আগস্ট ডা. টুলুর ব্যক্তিগত চেম্বারে আসি। সেখানে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে একবার ড্রেসিং করার পর ওই ডাক্তারের পরামর্শে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বর্তমানে হাফিজুর রহমান মডেল ওয়ার্ডের ৩৩ নম্বর বিছানায় ডা. বজলুর রশিদ টুলুর তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসার্ধীন আছেন। 

তিনি আরো জানান, অপারেশনে ত্রুটি থাকায় তার পায়ের হাড় বেরিয়ে গেছে ও অপারেশন করার সময় বাধা তারও দেখা যাচ্ছে। প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে। ডা. টুলু এবার তাকে জেনারেল হাসপাতালে অপারেশন করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। 

হাফিজুর রহমানের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আবারো রোগীকে সেই সরকারি হাসপাতালেই পাঠানো হলো। মাঝে চিকিৎসক ও প্রাইভেট হসপিটাল কর্তৃপক্ষ লাভবান হলেন। আর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলো গরিব এই পরিবারটি। 

এই বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য শনিবার বেলা ১টা ৩২ মিনিটে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গিয়েও ডা. বজলুর রশিদ টুলুকে পাওয়া যায়নি। পরে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনের দুইটি নম্বরে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

এবিএন/ইয়ানূর রহমান/জসিম/তোহা 

এই বিভাগের আরো সংবাদ