আজকের শিরোনাম :

অভয়নগরে ভুয়া টিপসহি দিয়ে ভিজিএফ’র চাল আত্মসাৎ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ২১:৫০

অভয়নগর (যশোর), ১৯ আগস্ট, এবিনিউজ : যশোরের অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের ৫নং পুড়াখালী ওয়ার্ডে ঈদ উপলক্ষে দেওয়া ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) এর চাল ভুয়া টিপসহি দিয়ে উত্তোলন দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ভিজিএফ কর্মসূচির তালিকায় নাম আছে কিন্তু তাদের চাল দেওয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীধরপুর ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডে মোট কার্ডধারী লোকের সংখ্যা ৮৯২ জন। ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর চৌধূরিকে প্রত্যেকের জন্য ২০ কেজি হিসাবে ১৭ হাজার ৮শ ৪০ কেজি চাল বুঝে দেন। জাহাঙ্গীর হোসেন ওই চাল শুক্র ও শনিবার বিতরণ করে শেষ করেন। এর মধ্যে ১৯২ জন কার্ডধারী লোক চাল না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যায়।

কার্ডধারীদের অভিযোগ পেয়ে শনি ও রবিবার তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউনিয়নের চৌকিদার চাল বিতরণের আগের দিন ভিজিএফ সদস্য’র তালিকায় গ্রহীতার স্বাক্ষরের ঘরে টিপ সহি দিয়ে রেখেছেন। পরে শুক্র ও শনিবার তাদের চাল দেওয়া হয়। যারা চাল পেয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে ২০ কেজি চালের স্থলে বেশির ভাগ লোক ১৮ কেজি চাল পেয়েছেন। কিছু লোক ৮ কেজি ১০ কেজি করে পেয়েছেন।

রাজু হোসেন নামে একজনকে চালের পরিবর্তে ২’শ টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের তালিকা দেখে বাড়ি বাড়ি যাওয়া হয় খোঁজ নিতে। এতে দেখা যায় তালিকা ভূক্ত শহিদুল ইসলাম(সদস্য নং৭৭৬),শরিফুল ইসলাম (৮৭০), মফিজুর রহমান (৮৫৭), মরিুল ইসলাম (৮৮৫), মিকাইল হোসেন (৮৮৩), রফিকুল ইসলাম (৮৮০), হাফিজুর রহমান(৮৭৯) চাল পায়নি । তাদেরকে ওই ওয়ার্ডের ই্উপি সদস্য জাহাঙ্গীর চৌধূরি স্লিপ দিয়েছিল।

চাল না পেয়ে শনিবার ১৯২ জন সদস্য ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিক্ষাভ করেন। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী তাদের কে পরে চাল দেওয়ার আশ্বস্ত করলে তারা বাড়ি ফিরে যান। অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান সাহেব তাদেরকে নানা ভাবে ম্যানেজ করেছেন। যে কারনে তাদের অনেকে পরের দিন রোববার চাল নিতে আসেনি। তবে রোববার চেয়ারম্যান নিজ হাতে কয়েক জনকে চাল বিতরণ করতে দেখা গেছে। তাদের কাউকে ৮ কেজি আবার কাউকে ১৬ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।  

 ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর চৌধূরি বলেন, আমি হিসাব মোতাবেক প্রত্যেকে চাল বিতরণ করেছি এর মধ্যে একটু সমস্যা হতে পারে। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী জানান, আমি ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর চৌধূরিকে হিসাব মোতাবেক চাল বুঝে দিয়েছি। জাহাঙ্গীর  নিজে উপস্থিত থেকে চাল বিতরণ করেছেন। কোন সমস্যা হয়নি। চাল কম দিচ্ছেন কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওরা তালিকা ভূক্ত না তাই ওদের কিছু দিয়ে খুশি করছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম জানান, যে সব লোক চাল পায়নি তারা যদি তালিকাভূক্ত হয় তাদের চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য তাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। ওই ইউনিয়নের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলার সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) মশিউর আজম জানান, আমি উপজেলায় নতুন এসেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে ওই ইউনিয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। কবে চাল দেওয়া হবে তা জানতে আমি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে অনেক বার ফোন করেছি কিন্তু তিনি আমার ফোন রিসিপ করেন নাই। পরে আমাকে না জানিয়ে শুক্র ও শনিবার ওই চাল বিতরণ করা হয়েছে। বিষয়টি আমি লিখিত আকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান জানান, তালিকায় যাদের নাম আছে তারা চাল পায়নি এটা প্রমাণ করতে পারলে ওই ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিএন/মো: সেলিম হোসেন/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ