আজকের শিরোনাম :

তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে অহরহ আসছে ভারতীয় গরু ও মাদকদ্রব্য

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৩৪

সুনামগঞ্জ, ১৮ আগস্ট, এবিনিউজ : সুনামগঞ্জে তাহিরপুর উপজেলার ট্যাকেরঘাট ও চানঁপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ঈদকে সামনে রেখে সীমান্তের ওপার থেকে ভারতীয় গরু, মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, চুনাপাথর, কয়লাসহ ভারতীয় বিভিন্ন নিষিদ্ধ পণ্য কিছু অসৎ বিজিবি সদস্যের ইশারায় অহরহ বাংলাদেশে আসছে বলে জানাগেছে। স্থানীয় বিজিবি কয়েকদিন পর পর লোক দেখানো পরিত্যাক্ত অবস্থায় কিছু মদ জব্দ করলেও এর সঙ্গে জড়িত কোন মাদক ব্যবসায়ী বা চোরাচালানীকে আটক করতে পারছে না স্থানীয় বিজিবি।

ট্যাকেরঘাট সীমান্তের অনেকেই জানান, ট্যাকেরঘাট ও চানঁপুর সীমান্ত এলাকায় বেশ কিছুদিন মাদকসহ চোরাচালানী পণ্য বন্ধ থাকলেও ইদকে সামনে রেখে বর্তমানে মাদকের উপদ্রুব বেড়ে গেছে। ট্যাকেরঘাট ও চানপুর বিজিবির পক্ষ থেকে জেলা খাটা মাদক মামলার আসামীদের অলিখিত সোর্চ মানিয়ে প্রতিনিয়ত সীমান্তের ওপার থেকে গরু, মদ, গাঁজা, ইয়াবা চুনাপাথর ও কয়লা পাচারের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্যাকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মো. আনিছুর রহমানের বিরোদ্ধে। তবে, ট্যাকেরঘাট বিজিবি কম্পনী কমান্ডার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন তিনি এসবে জড়িত নন। চোরাচালানীদের সরজমিনে গিয়ে ধরিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করে সীমান্ত এলাকার কয়েকজন জানান, ট্যাকেরঘাট সীমান্তের ট্যাকেরঘাট বিজিবির নামে রজনী লাইনের ফিরোজ মিয়া ও চানঁপুর বিজিবি ক্যাম্পের চানঁপুর গ্রামের বক্কার মিয়া এসব চোরাই পন্য থেকে প্রতিনিয়ত প্রতি গরু থেকে তিন হাজার, চুনাপাথর থেকে প্রতি হ্যান্ডট্রলি ৭০ টাকা, মদ, ইয়াবা ও গাজা থেকে সপ্তাহে ১০ হাজার করে উৎকোছ নিচ্ছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বিজিবি মদ, গাঁজা দিয়ে ফাসিঁয়ে দেয়ার ভয়ে সীমান্তের লোকজন মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

গতকাল শুক্রবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ট্যাকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইনের বরুঙ্গা চড়া, চানপুর সীমান্তের পাগলা চড়া ও বড়গোফ টিলা সহ একদিক স্পট দিয়ে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের এক ওয়ার্ড সদস্যের নেতৃত্বে চাঁনপুর গ্রামের লাল মিয়া টেইলার্স, আবুল কাসেম ও কালামের নেতৃত্বে ওপার থেকে গরু, মদ, ও মরা পাথরের অজুহাত দেখিয়ে ভারতীয় চুনাপাথর বাংলাদেশে নিয়ে আসছে এই চক্রটি।

অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে বড়ছড়া কয়লা শুল্কষ্টেশনের জিরো পয়েন্টসহ একাদিক স্পট দিয়ে ভারতে যাচ্ছে দেশীয় মাছ, মোরগ, তেল, ডিম, মোবাইল সিম সহ বাংলাদেশী অনেক পণ্য। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বড়ছড়া শুল্কষ্টেশন থেকে বারেকটিলা পর্যন্ত সীমান্ত রেখায় বিজিবি কোন টহলপার্টিকে এসময়ে দেখা যায়নি। চোরাচালানীরা এ সুযোগে রজনী লাইনের বরুঙ্গাচড়া দিয়ে প্রায় শতাধিক হ্যান্ডট্রলি গাড়ী দিয়ে ওপার থেকে চুনাপাথর এনে চানঁপুর বিজিবি ক্যাম্পের সম্মুখ দিয়ে যাদুকাটা নদীর তীরে ছিলা বাজারের পাশে মজুদ করার দৃশ্য চোখে পড়ে।  

ট্যাকেরঘাট বিজিবি কম্পানী সুবেদার মো. আনিছুর রহমান শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে মোবাইল ফোনে এসব বিষয় অস্বীকার করে জানান, তার দায়িত্বপূর্ন এলাকায় কোন চোরাচালানী হচ্ছেনা। কোন বিজিবি সদ্য এসব চোরাচালানীর সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে সীমন্তের ওপার থেকে মদ আসলেও পরিত্যক্ত অবস্থায় তারা এসব জব্দ করছেন। তবে, মদের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীকে ধরছেন না কেন জানতে চাইলে তিনি কোন সুদুত্তর দিতে পারেননি।

সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবলু এহছান এ বিষয়ে বলেন, তাহিরপুর সীমান্তের বাগলী শুল্কষ্টেশন দিয়ে চুনাপাথর বৈধ ভাবে বাংলাদেশে আমদানী হচ্ছে। এ শুল্কষ্টেশন ব্যতিত পুরো সীমান্ত এলাকায় তারকাটা বেড়া দ্বারা বেষ্টিত। এসব স্পট দিয়ে কোন চোরাচালানী হওয়ার সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্তা নেবেন বলে তিনি জানান।

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ