বদলগাছীতে শেষ মূহুর্তে জম জমাট কোরবানির পশুর হাট
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৪:০৫
বদলগাছী (নওগাঁ), ১৮ আগস্ট, এবিনিউজ : আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে নওগাঁর বদলগাছীতে কোরবানির পশুর হাট জম জমাট ভাবে জমে উঠেছে।
সরেজমিনে উপজেলার কোলাহাট, ভান্ডারপুর, গোবরচাঁপা, মাতাজিহাট ঘুরে দেখা যায়, ভারত থেকে গরু না আসায় এবার দেশী গরু দিয়ে চাহিদা মিটাতে হচ্ছে। যার কারণে কোরবানি পশুর দাম অনেক বেশি। স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা মোটা-তাজা গরু, ছাগল হাটে তুলেছে। আর ক্রেতাদের ঐ সব দেশী মোটা-তাজা কোরবানির গরু-ছাগলের উপর নজর বেশী।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভাষ্যে জানা যায়, এবার ভারতের গরু না আসলেও দেশী গরু দিয়েই এই এলাকার চাহিদা মিটিয়ে যাবে কিন্তু বাজারে দাম অনেক চড়া। স্থানীয় ভাবে দেশী খাবার দিয়ে মোটা তাজা করা পশুই বিক্রি হচ্ছে বেশী। শেষ দিকে এসে সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা কোরবানি কেনার জন্য বিভিন্ন হাটে ছুটা-ছুটি করছে।
তুলনামূলকভাবে এবার বাজারে ১৫ দিন আগে কোরবানির পশুর দাম কিছুটা হলেও কম ছিল শেষ সময় এসে অনেক বেশী। বর্তমান একটু নজরে লাগার মত কোরবানির পশুহলেই ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা চাহিদা করছে খামারিরা।
অপর দিকে স্থানীয় কিছু গরু খামারীরা জানায়, এবার বন্যার কারনে গো-খাদ্য ভুষি, খড়, আটা, খুদির দাম বাজারে অনেক বেশী সে তুলনায় গরুর দাম কম হওয়ায় আমাদের মত খামারীদের অনেক লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ একটা কোরবানির গরুর পিছনে সারা বছরে অনেক খরচ হয় সেই হিসাবে বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে কোলার হাটে গিয়ে কয়েক জন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি কোরবানির পশুর হাটে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী গরু প্রতি ১৫০ টাকা খাজনার তালিকা আছে সেইখানে দাপট খাটিয়ে গরু প্রতি ৩৮০ থেকে ৪শ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু রশিদে টাকার পরিমাণ না লিখে কৌশলে পরিশোধ লিখা হচ্ছে।
হাট ইজারাদার রফিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরকারি রেট বলা যাবে না তবে কোলাহাটটি স্কুল মাঠে বসানো হয়। এখানকার স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসায় কিছু চাঁদা দিতে হয়। এ জন্য পরিমাণে একটু বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে।
চকগোপিনাথ গ্রামের গরু ব্যবসায়ী মো. আবুল হোসেন, ওমর আলী জামাল উদ্দীনসহ অনেকে জানায়, এ বছর কোরবানির বড় গরু থেকে ছোট ও মাঝারী গরুর চাহিদা বেশি। এছাড়া ছাগল ব্যবসায়ী কাজল, সালাম হোসেন, তজিবর রহমানসহ অনেকে বলেন, কোরবানি গরুর পাশা-পাশি ছাগলের দামও বেড়েছে। ১৫/২০ দিন আগে ২০ থেকে ২২ কেজি ওজন ছাগলের দাম ছিল ১৩-১৪ হাজার টাকা।
বর্তমানে ঐ ছাগল ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। উপজেলার হাটগুলোতে সরকারী ভাবে পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য চিকিৎসক থাকা প্রয়োজন। কারণ পশুটা কোরবানির উপযোগী কিনা তা দেখার দরকার। তবে হাটগুলোতে পশু চিকিৎসক আছে কিন্তু তারাও পরিক্ষার জন্য গরু প্রতি ১শ’ টাকা আদায় করছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জিয়াউর রহমান কে পরিক্ষা বাবদ গরু প্রতি ১শ’ টাকা নেয়ার কথা বললে তিনি বলেন, অফিসিয়ালভাবে টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকেন প্রমাণ সাপেক্ষে তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া আমাদের লোকবল কম থাকায় এবং উপজেলায় একই দিনে একাধিক হাটবার থাকায় প্রতিটি কোরবানির হাটে আমাদের টিম দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম আলী বেগ বলেন, গরু-ছাগল প্রতি খাজনা বেশি নেয়ার কারণে গত ১০ আগষ্ট কোলাহাটে হাট ইজারাদারের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আবারো প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিএন/হাফিজার রহমান/জসিম/এমসি