আজকের শিরোনাম :

বড়াইগ্রামে খাল খনন না করে পুরো টাকা আত্নসাত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০১৮, ২০:০৯

বড়াইগ্রাম (নাটোর), ১৪ আগস্ট, এবিনিউজ : নাটোরের বড়াইগ্রামে খাল খনন না করে এ খাতে বরাদ্দের প্রায় তিন লাখ টাকার পুরোটাই আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে প্রকল্প সভাপতি খালের ভেতরের আগাছা পরিষ্কার ও কয়েকটি ছোট মাটির বাঁধ অপসারণের কথা বলে উল্টো গ্রামবাসীর কাছ থেকে ২০০/৩০০ টাকা হারে আরো প্রায় ১৫ হাজার টাকা আদায় করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের ভবানীপুর বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ‘ভবানীপুর বিল থেকে ওয়ালিয়া বড় নদী অভিমুখে খাল খনন প্রকল্পের’ জন্য টেস্ট রিলিফ (টি আর) প্রকল্প থেকে ৯ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এই প্রকল্পের সভাপতি জোয়াড়ী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য কামাল হোসেন খাল খনন না করে কাগজ-কলমে কাজ হয়েছে দেখিয়ে বরাদ্দের টাকা পুরোটাই তুলে নিয়েছেন। পরে তা তিনি ও চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদসহ অন্যান্যরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার(১৪ আগস্ট) সরেজমিন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, খাল খনন না করে শুধুমাত্র খালের ভেতরে থাকা আগাছা পরিষ্কার ও তিনটি ছোট মাটির তৈরী অস্থায়ী বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। যার জন্য পারিশ্রমিক ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বেশী হবে না। জলাবদ্ধতার শিকার গ্রামের কৃষকের নিকট থেকে উঠানো ১৫ হাজার টাকা চাঁদা তুলে এসব শ্রমিকের মজুরী পরিশোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এসময় প্রায় তিন কিলোমিটার খাল পার ঘুরে কোথাও মাটি কাটার চিহ্ন চোখে পরে নাই।

এ বিষয়ে আটঘরি গ্রামের আতিয়ার রহমান এবং ভবানীপুর গ্রামের তহমিনা বেগম ও রাখি বেগম নামে খাল পারের দুই গৃহবধু জানান, তারা খালে কোন প্রকার মাটি কাটার শ্রমিক দেখেন নাই। কেউ কোন মেশিন দিয়েও (এক্সকেভেটর) মাটি কাটেন নাই। সপ্তাহ খানেক আগে একদিন কিছু শ্রমিক এসে খালের আগাছা কেটে পরিষ্কার এবং খালের মধ্যে দেওয়া ছোট মাটির বাঁধ অপসারণ করেছেন মাত্র।

একই গ্রামের কৃষক আবুল কালাম ও ভাদু প্রামাণিক জানান, জলাবদ্ধতা দুর করার জন্য খাল খননের বরাদ্দ এলেও খনন না হওয়ায় বিলের জলাবদ্ধতার সমস্যা দুর হবে না।  

ওয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বলেন, খালটি আমার ইউনিয়নের ওয়ালিয়া বিলে গিয়ে মিসেছে। খালের মাঝে মাছ ধরার জন্য দেওয়া মাটির বাঁধ অপসারণ ছাড়া খননের কোন কাজ হয় নাই।

এ বিষয়ে প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য কামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিয়মানুযায়ী কাজ করা হয়েছে বলে দাবী করলেও খালের কোন অংশে মাটি কাটা হয়েছে তা জানাতে পারেননি। এছাড়া গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে শ্রমিকের মজুরী দেয়ার বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারেন নাই।
জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্পের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গ্রামবাসীর নিকট থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।

ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) অভিজিৎ বসাক জানান, বিষয়টি তার জানা নেই, এ বিষয়ে এখনই তার কিছু করারও নাই। তবে ইউএনও ছুটি থেকে ফিরে এলে বিষয়টি তাকে জানাবেন বলেও জানান তিনি।

এবিএন/আশরাফুল ইসলাম/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ