আজকের শিরোনাম :

ফরিদপুরে পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় হুমকির মুখে আতিয়ার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১৮:১৪

পৌরসভাকে সিটি করর্পোরেশনে উন্নীতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করে হুমকির মুখে পড়েছেন আতিয়ার রহমান। তিনি বিভিন্ন মহলের হুমকির প্রেক্ষিতে বর্তমানে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে মুঠোফোন আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এ কথা জানান তিনি।

ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানি পর গত বুধবার এ আদেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সেই সঙ্গে রুলও জারি করে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ফরিদপুর পৌরসভাকে প্রশাসনিক পুনবিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) ১১৬ তম সভায় সিটি কর্পোরেশন করার অনুমোদন পরও গত ৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল কেন বেআইনি ও আইগত কর্তৃত্ববহিভূর্ত ঘোষণা করা হবে না।

স্থানীয় সরকার সচিব, মন্ত্রি পরিষদ সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট ১০ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ফরিদপুর পৌসভার নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন পৌরসভার বর্ধিত এলাকার ভোটার সাবেক আলীয়াবাদ ইউনিয়নের বিলমামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আতিয়ার রহমান (৫৪)।

প্রথম জীবনে অতিয়ার বিডিআর সদস্য ছিলেন। এরপর চাকুরি ছেড়ে তিনি আইনজীবী সহকারী হিসেবে ২১ বছর কাজ করেন। বর্তমানে তিনি এলাকায় ডেকোরেটরের ব্যবসা করেন। ‘তাজ ডেকোরেটর’ এর সত্ত্বাধীকারি তিনি। তিনি বিবাহিত এবং দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা।

আতিয়ার রহমান বলেন, তার রিটের কারনে পৌরসভার নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তাকে নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে তাকে মেরে ফেলা হবে। তিনি বলেন, এ হুমকির ভয়ে তিনি একটি মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন। আতিয়ার রহমান বলেন, আমি তো অন্যায় কিছু করিনি। আমি আইনের বাইরে কোন কাজ করিনি। অথচ আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আমার আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

রিট দায়েরের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আতিয়ার রহমান বলেন, আমিতো ফরিদপুরের মঙ্গল চাই। আমাদের বলা হয়েছিল ফরিদপুর সিটি কর্পোরেশন হবে এজন্য অনেক এলাকা তার আওতায় আনতে হবে। এজন্য আলীয়াবাদ ইউনিয়নের বিরাট এলাকা সিটি কর্পোরেশনের জন্য অর্ন্তভুক্ত করা হয়। সিটির স্বার্থে ফরিদপুরের মর্যাদার স্বার্থে আমরা তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আজ বর্ধিত পরিদপুর পৌরসভার নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে। যে পৌরসভা নয়টি ওয়ার্ডের মানুষের প্রয়োজন মেটাতে পারে না, সে পৌরসভা নতুন আরও ১৮টি ওয়ার্ডের প্রয়োজন মেটাবে কি করে। আমরা কোন অবস্থানেই পৌরসভায় যেতে চাই না। পৌরসভা নির্বাচন হলে আমাদের ইউনিয়নে ফেরত দিয়ে দেওয়া হোক।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, রিটকারি আতিয়ারের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। তাঁর নিরাপত্তার জন্য সর্বক্ষণিক নজর রাখা হবে। এ ব্যাপারে পুলিশ তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

প্রসঙ্গত গত বছর ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) ১১৬ তম সভার প্রধান আলোচ্যসূচি ছিল ফরিদপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা। ওই সভায় বিদ্যমান ফরিদপুর পৌরসভা এবং স¤প্রসারিত এলাকা নিয়ে ফরিদপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন  গত ৩ নভেম্বর ফরিদপুর পৌরসভা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে। এ প্রেক্ষাপটে এ রিট করা হয়েছে।

ফরিদপুর পৌসভা নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, নির্বাচন হাইকোর্ট স্থগিত করেছে এ জাতীয় নির্দেশনা নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি পাননি। নির্বাচন কমিশন সচিবারয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে তাদের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। ওই নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত চলমান নির্বাচনী কর্মকান্ড অব্যাহত থাকবে।
 

এবিএন/কে এম রুবেল/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ