আজকের শিরোনাম :

ফরিদপুরের মধুখালী-মাগুরা রেলপথ চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী : রেলমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৩৩

রেল সড়ক মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, রেল লাইন কামারখালী বাজারের ভিতর দিয়ে যাবে, না বাজারের বাইরে দিয়ে যাবে এ সিদ্ধান্ত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে বাজারের বাইরে দিয়ে রেল টেনে নিতে হলে অনেকের জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, সেক্ষেত্রে কোন ওজর আপত্তি চলবে না। ফরিদপুরের মধুখালী-কামারখালী-মাগুরা রেলপথ চালুর বিষয়টি সরেজমিতে পরিদর্শন শেষে এক পথসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথাগুলি বলেন রেলমন্ত্রী।

আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কামারখালী বাজার সার্বজনীন রাধাকৃষ্ণ নাট মন্দিরের সামনে এ পথসভার আয়োজন করা হয়। এ সভা আয়োজন করা হয় কামারখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। রেলমন্ত্রী বলেন, রেলকে বিগত সরকারগুলি ধ্বংস করে দিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। কেননা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া উন্নত দেশ হতে পারে না।

তিনি বলেন, রেল লাইন কামারখালী বাজারের ভিতর দিয়ে যাবে এ নিয়ে বাজারটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ কথা আমি শুনেছি। তাই  সরাসরি আমি দেখতে এসেছি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। টেন্ডার পর্যন্ত আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু এ এলাকার মানুষদের ক্ষোভের কথা শুনে সে টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে।

রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের সমস্যা করে কোন কাজ করতে চাই না। উন্নয়ন জনগণের জন্য। তারা যদি ভোগান্তিতে পড়ে তা আমরা গুরুত্বসহকারি দেখি।

তিনি বলেন এ পর্যায়ে দুটি পথ খোলা আছে একটি হলো বাজার মসজিদ, মন্দির, বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা করে উড়াল পথে বাজারের উপর দিয়ে রেল লাইন টেন নিয়ে যাওয়া, আরেকটি হলো বাজারকে অক্ষুন্ন রেখে দুই পাশের কোন এক পাশ দিয়ে ঘুরিয়ে রেল নিয়ে যাওয়া। তবে সে ক্ষেত্রে  জমি দিতে হবে আপনাদের। তখন জমি দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি করা চলবে না।

রেলমন্ত্রী বলেন, আপমনাদের কাছে দুটি সম্ভাবনার কথা বলে গেলোম। তারপরও বাস্তবতা হচ্ছে দ্রুত আমরা রেল লাইন মাগুরা পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাই। যদি প্রথম প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ হয় তাহলে আগামী জানুয়ারি কাজ শুরু করা যাবে। আর দ্বিতীয় প্রস্তব হলে এ কাজ আরও দুই/তিন বছর পিছিয়ে যাবে কেননা তখন নতুন করে প্লান করতে হবে, জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, তবে মূল সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা দুটি বিবেচনার বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করবো। তিনি যেটায় সম্মতি দেবেন সেটাই আমরা বাস্তবায়ন করবো।

সভায় সভাপত্বি করে কামারখালী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি কাজী মতিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান।

আব্দুর রহমান বলেন, এ বাজার ্ঐতিহ্যবাহী অন্তত দুইশ বছরের  পুররো। অনেক শতবর্ষী মমসজিদ মন্দির এ বাজারে রয়েছে। সে বাজার রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা রেল লাইন চাই তবে বাজার আক্ষুন্ন রেখে। বহু প্রাচীন মসজিদ ও মন্দির রক্ষা করে রেল চাই।  রেল লাইন যদি ঘুরিয়ে নিতে হয় তাতে যদি দুটি টাকা কম বা বেশি লাগে লাগুক, আমরা বাজারের বাইরে দিয়ে রেল নিতে চাই।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-১ ( বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী) আসনের সাংসদ মনজুর হোসেন ও মাগুরা-১ (সদর ও শ্রীপুর) আসনের সাংসদ সাইফুল ইসলাম শেখর। প্রসঙ্গত ১৯৪১ সাল থেকে মধুখালী-কামারখালী পথে রেল চলাচল শুরু হয়। কামারখালী বাজারের ব্যবসায়ীক স্বার্থ বিবেচনা করে ওই বাজার পর্যন্ত রেল সম্প্রসারণ করা হয়। কিন্তু ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আড়কান্দি সেতু ভেঙ্গে গেলে ওই বছর আগস্ট থেকে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন করে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত রেল সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হলে রেল কর্তৃপক্ষ কামারখালী বাজার রক্ষা করে তার বাম পাশ দিয়ে রেল নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এতে বেকে বসে ওই এলাকার লোকজন। ‘তিন ফসলী জমি নষ্ট নয়, রেলের জমিতে রেল চাই’-শ্লোগানকে সামনে রেখে কামারখালীর সর্বস্তরের জনগণের উদ্যোগে আন্দোলন শুরু হয়। ওই প্রেক্ষাপটি রেল তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোজাসুজি কামারখালী বাজার হলে উড়াল সেতুর মাধ্যমে রেল নেওয়ার উদ্যোগ নেই। এ প্রেক্ষাপটে বেকে বসে কামারখালী বাজারের ব্যবসায়ীরা।


এবিএন/কে এম রুবেল/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ