বীজ উৎপাদনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে ফরিদপুরের তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৩৪
দেশের কৃষকদের নিকট কৃষি উপকরণ সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করণকল্পে এবং দেশের সেচ এলাকার সম্প্রসারণ কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য ১৯৬১ সনের ১৬ অক্টোবর তারিখে ৩৭ নং অধ্যাদেশ বলে ইস্ট পাকিস্তান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লাভ করে, যা বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) নামে পরিচিত।
দেশে বর্তমানে বিএডিসি’র অধিনস্থ বীজ ও উদ্যান উইং এর আওতাভুক্ত সরকারি ২৪টি বীজ উৎপাদনকারী খামার রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফরিদপুর তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। ১০৩.৪৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত খামারের মধ্যে ৮২.৪৮ একর আবাদী জমি। তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামারে মূলত ধান, হাইব্রিড ধান, গম, ভূট্টা, আলু ভিত্তি বীজ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ডাল, তৈল ও সবজি বীজ উৎপাদনসহ বন্যা পূনর্বাসনের ধানের চারা উৎপাদন ও বিতরণ কাজ করে থাকে তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদনকারী খামার।
গত ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসএল-এইটএইচ হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে দেশের শীর্ষে অবস্থান করেছে এই বীজ উৎপাদন খামার।
চলতি বছর ১২ একর জমিতে উন্নত জাতের এস্টারিক্স বীজ আলু চাষ করে ৮৬ টন বীজ আলু উৎপাদন হয়েছে। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ২টন বেশি। ১০.০০ একর জমিতে উচ্চফলনশীল বারি গম-৩৩ চাষ করে ১৩ টন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে যা লক্ষমাত্রার চেয়েও ৩টন বেশি। বোরো মৌসুমে ১৫ একর জমিতে ব্রি ধান ২৮ চাষ করে ২৫.১০০ টন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ১টন বেশি। এছাড়াও ৭ একর জমিতে ব্রি ধান ৫৮ চাষ করে ১৩ টন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১টন বেশি উৎপাদন হয়েছে। ৩৪.৫৮ একর জমিতে বোরো হাইব্রিড এসএল-এইটএইচ চাষ করে ৫২.৪ টন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দেড়গুণ বেশি বীজ উৎপাদন হয়েছে।
২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে বীজ উৎপাদন করে শীর্ষে অবস্থান করেছে তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। চলতি ২০১৯-২০২০ বছরে বীজ উৎপাদন বর্ষে ৭৮.৫৮ একর জমি থেকে ১৭১.৪ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৮৯.৯ টন বীজ উৎপাদন করছে।
করোনাকালীন সময়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বীজ উৎপাদনে দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে এই খামারটি। তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন খান বলেন, বিএডিসির মাননীয় সুযোগ্য চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় করোনাকালীন সময়ে ভালো বীজ ব্যবহার করে, শ্রমিকদের দক্ষতাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে এবং জমির সর্বোত্তম ব্যবহারে ভালো ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে সুষম সার ব্যবহার করে এবং সর্বোপরি খামার বিভাগের সার্বিক সহযোগীতার মাধ্যমে শীর্ষে থাকা সম্ভব হয়েছে। চলতি মৌসূমের আউশ বীজ ব্রিধান-৪৮ ১১.০০ একর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭.৬ টন এবং চলতি আমন মৌসূমের ব্রিধান-৭৫, ব্রিধান-৮৭, ব্রিধান-৩৯ ও বিনাধান-১৭ সর্বমোট ৬৫.০০ একরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯০.৬৯৫ মে.টন। আশা করা যাচ্ছে করোনাকালীন ও বন্যার পরবর্তী সময়ে ভালো ম্যানেজমেন্ট ও ভালো বীজ ব্যবহারে এবারও আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে।
তাম্বুলখানা খামারটি পর্যায়ক্রমে ভিত্তি ও মানঘোষিত বীজ উৎপাদন করে খামারটি নিজ এলাকা ফরিদপুরসহ দেশের ক্রমবর্ধমান বীজের চাহিদা পূরণসহ বীজ শিল্প উন্নয়ন ও বিকাশের গুরুত্বসহ তথা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
এবিএন/কে এম রুবেল/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ