আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপাবে এনসিটিবি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২০, ১৫:২১
আগামী ২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩৫ কোটিবই ছাপানো হবে। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ১১’শ কোটি টাকা।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরুতে কিছুটা দেরি হলেও চলতি জুন মাস থেকেই দরপত্র আহ্বান শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী আগস্ট মাস থেকে এসব পাঠ্যপুস্তক ছাপা শুরুর লক্ষ্য নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করছে এনসিটিবি।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বছরের প্রথমদিন পাঠ্যপুস্তক উৎসব করে বিনামূল্যের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। চলতি বছর করোনার কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষাবর্ষ কিভাবে শেষ হবে সেটি নিয়েও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে।
তবে, এনসিটিবি জানিয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপানোর কাজে যাতে কোনো সমস্যা না হয় এ জন্য তারা দরপত্রের অনেকাংশের কাজ অনলাইনে শেষ করবে। গত ২ জুন মাধ্যমিক পর্যায়ের বইয়ের কাগজের দরপত্র উন্মুক্ত করেছে তারা। সেই সাথে প্রাথমিকের দরপত্র আগামী ১১ জুন উন্মুক্ত করা হবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহার কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রবিবার তিনি বলেন, ‘এই করোনাকালেও প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যের বই ছাপানোর জন্য আমরা প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি। এ জন্য আমরা নিজেরা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে জুমমিটিংয়ের মাধ্যমে বই ছাপানোর প্রক্রিয়াগুলোকে চলমান রেখেছি। ইতোমধ্যে গত ২ জুন কাগজের যে টেন্ডারটা হয়েছে সেটাকে আমরা ৫ বার ইজিপির মাধ্যমে সময় বাড়িয়ে লাইভে রেখেছিলাম।’
তিনি যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক উৎপাদন করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের বিষয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা হয়তো আগামী আগস্টের মধ্যে এই চুক্তিতে চলে গিয়ে বই উৎপাদনে চলে যেতে পারবো। যদি আমরা উৎপাদনে যথারীতি চলে যেতে পারি তাহলে নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব বই উৎপাদন সম্পন্ন করতে পারব।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন, এবার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপানো হবে। এরজন্য ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ১১শ কোটি টাকা।
অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, ২০২১ সালে মাধ্যমিকে প্রায় ২৪ কোটি ৪১ লাখ বই ছাপানো হবে। আর এখন পর্যন্ত প্রাথমিকের নতুন চাহিদা আসেনি। তাই, প্রাথমিকে পুরাতন চাহিদা ধরে প্রায় ১০ কোটি ৫৪ লাখ বই ছাপানো হবে। তাই, সব মিলিয়ে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপানো হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার কাজ দেয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার সক্ষমতা আছে কিনা। সেই সাথে কাজ পাওয়ার পর তা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা সেটি নজরদারিতে রাখবে এনসিটিবির আলাদা পর্যবেক্ষক দল।
এদিকে, মুদ্রণ মালিক সমিতি জানায়, তাদের আগের কাজের বিল এখনো সব দেয়া হয়নি। সেটি না পেলে নতুন বই ছাপার কাজ করতে অসুবিধা হবে তাদের। তবে, আগের বিল পরিশোধ করার কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে এনসিটিবি।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, শুরু থেকে ২০২০সাল পর্যন্ত মোট ৩৩১ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬১৬ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আর ২০২১ সালে উৎপাদন করা হবে প্রায় ৩৫ কোটি বই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রতিবছর সরকারের বিশাল এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করছে, যা সারাবিশ্বে নজরকাড়া সুনাম বয়ে এনেছে।
খবর বাসস এবিএন/সাদিক/জসিম
খবর বাসস এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ