আজকের শিরোনাম :

আন্দোলনকারীদের ভিডিও ধারণ করে দেখে নেওয়ার হুমকি

দেশব্যাপী ধিক্কারের মুখে ইবি প্রক্টর মাহবুব

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মে ২০১৮, ১৫:১৮

ইবি (কুষ্টিয়া), ১১ মে, এবিনিউজ: কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকরা একাত্মতা ঘোষনা করেছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা প্রক্টরকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।

তবে আন্দোলনকারীদের ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ করে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। এতে তিনি দেশব্যাপী ধিক্কার আর চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

গত বুধবার ইবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে গিয়ে ছবি তোলেন এবং ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন তিনি। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধাকমি দেন।

এর আগে গত ১১এপ্রিলও তিনি খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করা ইবি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার ছলে লুকিয়ে লুকিয়ে ছবি তোলেন। তবে তার মোবাইল ক্যামেরার ফ্লাস লাইট চালু থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছে তা ধড়া পড়ে যান। এনিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত এই প্রক্টরের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, তেল চুরি, বিগত প্রশাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবিতে বুধবার সারা দেশের সাথে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করে ইবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওইদিন দুপুরে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের পাদদেশে শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে মানবন্ধন শুরু করলে সেখানে উপস্থিত হন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছবি এবং ভিডিও ধারণ করতে শুরু করেন।

পরে তার (ইবি প্রক্টর) ‘ছবি এবং ভিডিও ধারণ’ করার ছবি কোটা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট হওয়ার সাথে সাথে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। দেশের পুরো ছাত্রসমাজ তাকে ঘৃণাভরে ধিক্কার দিতে থাকে এবং তার এমন নির্লজ্জ কর্মকান্ডকে প্রত্যাখান করে।

পাঠকদের সুবিধার্থে ফেসবুক গ্রুপ থেকে কিছু মন্তব্য হুবহু তুলে ধরা হল। রাসেল মীয়া লিখেছেন, ‘দালালীর মাধ্যমে প্রক্টর হইছে তাই প্রতিদান দেওয়ার জন্য পিক তুলছে।’

 তাহসিনুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন, ‘শিক্ষক কে গালি দেওয়া যায় না। কিন্তু গালি দেয়ার দরকার ছিল।’

জাহীর খান নামে একজন পাঠক লেখেছেন, ‘কী নির্লজ্জ!!! ছি ছি!! টিচাররা এই রকম পা চাটা গোলাম হয় ভাবতেও অবাক লাগে!!’

রাহাত নামে একজন লিখেছেন, ‘আমি দালাল দেখিনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক (ইবি প্রক্টর) দেখেছি।’

নীড় হারা পাখি নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে মন্তব্য করেন, ‘আগে রাবিতে থাকতে শিবির। বিএরপির আমলে ইবিতে শিক্ষক হইছে। ক্যাম্পাসে গাড়ি চালাইয়া তেল চুরি করেছে। শিক্ষক নিয়োগের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ খাইছে।’

প্রক্টরের নিজ বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, ‘স্যার আমার ডিপার্টমেন্টের, আমি বুঝি না স্যার এসব করে কোন স্বার্থে নিজের ইমেজ খানা নষ্ট করতেছে?’

তাহের মন্ডল নামে সাবেক এক ইবি শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, ‘ইবির প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে লজ্জা বোধ করছি। উনি নাকি ইবির সেরা প্রক্টর? কিছু কিছু পা চাটা শিক্ষক আর ছাত্র উনাকে সেরা প্রক্টর বানিয়েছে। উনার রেজাল্ট যাচাই করা দরকার। উনি শিক্ষক নিয়োগ কি মেধার দ্বারা পেয়েছেন নাকি কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন?’

মাহিদুল হাসান লিখেছেন, ‘মূল্যবোধ না থাকলে যা হয় আর কি! এরা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক!’।

মাহফুজুর রহমান নামে এক জন মন্তব্য করেন, ‘এ কেমন প্রক্টর? ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে বাধা প্রদান করে! ইনি আসলে প্রক্টর নামের কলঙ্ক।’

আহমেদ শাকিল নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এইসব আধাপাগলগুলোর জন্য দেশের আজকে এই অবস্থা।’

আশিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, ‘ছাত্র পড়ালেই শিক্ষক হওয়া যায় না!!! পরিমালরাও কিন্তু শিক্ষক ছিল। তাই এদের কে নিয়ে ভাবার কোন কারণ নাই। ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চা।’

মহসিন সরকার লিখেছেন, ‘এরা টিচার নামের কলঙ্ক, বাংলার ছাত্র-ছাত্রীরা ভয় পায় না।’

সজিব সরকার মন্তব্য করেন, ‘এইসব ফুটোগ্রাফার থাকতে আমাদের চলচ্চিত্রে ক্যামেরাম্যান পাওয়া যাচ্ছে না।’

মেহেদী হাসান নামে একজন লেখেছেন, ‘এই শিক্ষকের একটু ছোট খাটো জীবন বৃত্তান্ত দেন। কেন সে বার বার এমন হুমকি ধামকি দিচ্ছে, বুঝতে পারছি না। এরা কি অযোগ্য টিচার নাকি কোটাধারী টিচার? আমরা একটু জানতে চাই। যেখানে সব শিক্ষকেরা একাত্মতা প্রকাশ করছেন, সেখানে উনি কেন বার বার বাধা দেন?!’

বেলাল হোসেন শুভ নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘একজন সৎ বিবেকবান ভাল মানুষই পারে তার জাতির উন্নতি কামনায় সকলের পাশে দাঁড়াতে। কিছু কুলাংগার এর বিরোধীতা করবে এটাই স্বাভাবিক। তাতে বীর কখনো পিছ পা হয় না। সেলুট স্যার।’

সাদিকুর রহমান নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘যারা ১৯৭১ সালে রাজাকার দেখেন নাই তাদের জন্য ২০১৮ সালের রাজাকার দেখার সুযোগ!!!’

এবিএন/অনি আতিকুর রহমান /জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ