আজকের শিরোনাম :

ইবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত : আন্দোলনকারীদের প্রক্টরের হুমকি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০১৮, ১৭:১১

ইবি, ০৮ জুলাই, এবিনিউজ : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমারের বিচারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে রবিবার বেলা ১১টার দিকে পুনরায় ক্যাম্পাসের ডায়না চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। তবে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের চতুর্থ তলায় গেলে ফিন্যান্স বিভাগের কতিপয় শিক্ষার্থীর বাঁধার মুখে পড়ে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ফের হুমকি দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্ত্বর থেকে ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমারের বিচার দাবি করে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ও অনুষদ ভবন প্রদক্ষিণ করে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের চতুর্থ তলায় গেলে সেখানে ওই শিক্ষকপন্থী কয়েকজন শিক্ষার্থী বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে ওই শিক্ষকপন্থী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কি শুরু করে।

এসময় সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের কাজে বাঁধা দেয় তারা। পরে বিভাগীয় সভাপতি সুতাপ কুমার ঘোষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে উচ্চবাচ্য বিনিময় করে তাদের আন্দোলনের ভিডিও ধারণ করেন। এবং তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে দুই শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড নিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ফিন্যান্স বিভাগের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের চতুর্থ তলায় গেলে সেখানে ওই শিক্ষকপন্থী কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীরা আমাদের মারতে আসে। পরে ওই বিভাগের শিক্ষকরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

পরে প্রক্টর স্যার এসে আমাদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড নিয়ে যান এবং ভিডিও ধারণ করেন। আমাদেরকে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী বলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেন। তবে আমাদের প্রশ্ন, ছাত্রী হেনস্থার প্রতিবাদ করায় যদি আমরা বিশৃঙ্খলাকারী হই তবে প্রক্টর স্যার কি ওই শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন? তাহলে ঘটনার তিনদিন পার হলেও এখনো কোন তদন্ত কমিটি গঠিত হলো না কেনো? আমরা দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চাই।

বিষয়টি নিয়ে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সুতাপ কুমার ঘোষ বলেন, বিভাগের সামনে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল। আমরা বিষয়টি প্রক্টর স্যারকে জানিয়েছিলাম। তিনি বাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান আইডি কার্ড ও ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করে বলেন, অপরাধ যেই করুক সেটি প্রমাণ সাপেক্ষে তার শাস্তি দিতে বর্তমান প্রশাসন সামান্যটুকুও কুন্ঠাবোধ করছে না। কিন্তু সেই সুযোগ নিয়ে কোন অপশক্তি বা দুষ্টুচক্র যদি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করে তবে তাকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না, হবে না।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুলাই শিক্ষকের মানসিক নির্যাতন ও হুমকিতে ছাত্রী ভারসাম্যহীন হওয়া নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে গত শনিবার ক্যাম্পাসে মানবন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে ঘটনার ৩তিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত কোন তদন্ত কমিটি গঠন কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।

এবিএন/অনি আতিকুর রহমান/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ