আজকের শিরোনাম :

বেরোবির ভর্তি পরীক্ষা

দুই ইউনিটে ফেল: অন্য ইউনিটে রেকর্ড মার্কস নিয়ে প্রথম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৪

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ¯œাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ (কলা অনুষদ) এবং ‘এফ’ (জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদ) ইউনিটে ফেল করা মিশকাতুল জান্নাতের ‘বি’ ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) মানবিক থেকে রেকর্ড পরিমাণ মার্কস নিয়ে প্রথম হওয়ায় ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ‘বি’ ইউনিটে (বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান) বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে তিনি রেকর্ড পরিমান মার্কস তুলেছেন।

অন্য কোন ইউনিটের কোন শিফটে কেউ সে পরিমাণ মার্কস তুলতে পারেনি। অথচ একই বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান) পরীক্ষা দিয়ে তিনি  ‘এ’  ইউনিটে এবং ‘এফ’ ইউনিটে ইংরেজি, মানষিক দক্ষতা, সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে মিশকাতুল জান্নাত পাশই করতে পারেনি।  বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে চলছে তীব্র সমালোচনার ঝড়।

জানা যায়, মিশকাতুল জান্নাত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় এ, ‘বি’ এবং ‘এফ’ ইউনিটে অংশ নেন। গত ১৯ শে নভেম্বর সকল  ইউনিটের ফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় শিফটে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-১৪১৭৫২) অকৃতকার্য হন মিশকাত। একইভাবে ‘এফ’ ইউনিটেও চতুর্থ শিফটে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-৬৪১৭৫১) অকৃতকার্য হন তিনি। অথচ ‘বি’ ইউনিটের (সামাজিক বিজ্ঞান) মানবিক থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মিশকাতুল জান্নাত এমসিকিউয়ে ৮০ এর মধ্যে ৬৭.২৫০ পেয়েছেন। যা অন্য কোন ইউনিটে আর কেউ পায়নি।  তার ‘বি’ ইউনিটে পরীক্ষার রোল ২৪০২৭৮। মিশকাতুল জান্নাত বগুড়া জেলার  ধুনট উপজেলার গোসাইবারী ইউনিয়নের এনামুল বারীর মেয়ে। মিশকাতুল জান্নাতের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মিশকাতুল জান্নাত সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

আরো জানা যায়, মিশকাতুল জান্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর আপন ছোট বোন।  নিজের ছোটবোন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও তিনি ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এবিষয়ে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক ইমরানা বারীর সাথে যোগাযোগের জন্য অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে ও এসএমএস দিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
 
অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘এ’ ইউনিটে প্রথম শিফটে প্রথম স্থান অধিকারী নিলয় ঘোষ ‘বি’ ইউনিটেও প্রথম শিফটে প্রথম স্থান অধিকার করেন। একইবাবে ‘ডি’ ইউেিনট প্রথম স্থান অধিকারকারী জিহাদ রহমান ‘ই’ ইউনিটেও ৫ম স্থান অধিকার করেন। আবার ‘এ ইউনিটে (সাইন্স) প্রথম স্থান অধিকারকারী শানজিদা আলম করবী ‘বি’ ৭৪ স্থান অধিকার করেছেন। এরকমভাবে প্রত্যেকটি ইউনিটের ১ম থেকে ৫ম স্থান অধিকারীগণ অপর যেকোন ইউেিনটে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন। কিন্তু মিশকাত জান্নাত ‘বি’ ইউনিটে প্রথম হলেও অপর দুইটি ইউনিটে ফেল করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক সোহেলা মুশতারী বলেন, ‘ইমরানা বারীর ছোটবোন এখানে পরীক্ষা দিয়েছে সেটা আমাদেরকে তিনি লিখিতভাবে জানাননি। যখন ও (মিশকাতুল জান্নাত) এডমিশনের জন্য আসল, ওকে আমরা চিনতাম। ফেসবুকে ছবি দেখেছি। ওকে দেখে আমরা স্তব্ধ হয়ে গেছি যে, এই মেয়ে এখানে কেন? এবং মোটেও আমরা খুশি হইনি। আমরা ভয়--------এবং সত্যিকারার্থেই আমরা খুশি হইনি। খুশি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
 

এবিএন/ইভান চৌধুরী/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ