আজকের শিরোনাম :

রাত পোহালেই জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন, কেমন হবে নতুন নেতৃত্ব?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০১৯, ১৮:৫৫

আসন্ন ২০জুলাই, শনিবার অনুষ্ঠিত হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন।আর এই সম্মেলন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহড়া ও বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন পদ প্রত্যাশীরা।

জবি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব কেমন চান? এমন প্রশ্নের জবাবে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছাত্ররা ই আসা উচিৎ যারা বর্তমানে অধ্যায়রত। এমন নেতৃত্ব না আসুক যারা সন্ত্রাসী, রাহাজানি, বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগ নেতা হবে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর প্রতিনিধি। যারা হবে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক।উল্লেখ যে, বিগত কমিটি ভেঙ্গে যায়, মারামারি জনিত একটি কারণে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, ক্যাম্পাসে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে বজায় থাকে এমন নেতৃত্ব ই আসা উচিৎ।

পদপ্রত্যাশী নেতারা নিজের গ্রুপের কর্মীদের নিয়ে প্রতিদিন ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আসছে বিগত কয়েকদিন। আজ শুক্রবার, রাত পুহালেই সেই কাঙ্খিত সম্মেলন। সম্মেলনের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহব্বায়ক আশরাফুল আলম টিটন বলেন, আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পুর্ন। আগামীকাল   সুশৃঙ্খল একটি সম্মেলন সবাই দেখতে পাবে সেই প্রত্যাশা ই ব্যাক্ত করি।

যুগ্ম-আহব্বায়ক ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, আমি ব্যাক্তিগতভাবে একজন পদপ্রত্যাশী। পদ পাই বা না পাই, আজীবন নৌকার জন্য কাজ করে যাব, শেখ হাসিন সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে মানুষ হিসেবে সকল মানবিক কাজের পাশে থাকব।

 যুগ্ম আহব্বায়ক আলামিন শেখ বলেন, আগামীকাল সম্মেলন অবশ্যই চাইব জবি শাখা ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন সফল করবে। এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মানিত অভিবাবকদ্বয়ের কাছে প্রত্যাশা থাকবে অবশ্যই যোগ্যতার ভিত্তিতে সৎ,আদর্শবান ও ত্যাগী নেতৃবৃন্দদের মূল্যায়ন করবেন।

যুগ্মআহব্বায়ক সৈয়দ শাকিল বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপস্থিতিতে আগামীকালের সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে সেই প্রত্যাশা ই করি।

যুগ্ম আহব্বায়ক তারেক আজিজ বলেন, আজ শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও কোন অংশে নেতাকর্মীদের কমতি ছিল না ক্যাম্পাসে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাইয়ের মায়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়। সেখানে পদপ্রত্যাশীসহ সকল ছাত্রলীগ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্মেলন পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন। সুশৃঙ্খল পরিবেশে  একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সম্মেলন উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।

 বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয় ভাইদের নিকট প্রত্যাশা থাকবে অবশ্যই ত্যাগী ও পরিশ্রমীদের যেন মূল্যায়ন করেন।সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য নুরুল আফসার, আমরা ছাত্রলীগ পরিবার  সংগঠনের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে সর্বদায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যারা দলের জন্য কাজ করেছে, ছাত্রলীগে যাদের ত্যাগ রয়েছে তাদের ই মুল্যায়ন করা উচিৎ কমিটিতে।
সরজমিনে ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে দেখা যায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম বেশ শোনা যাচ্ছে।

তারা বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ড করার মাধ্যমে, ব্যানার, পোস্টার লাগানোর মাধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ক্যাম্পাসে।

পদপ্রার্থী হিসাবে আলোচনায় রয়েছেন গত কমিটির সহ-সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম টিটন, সৈয়দ শাকিল, ইব্রাহীম ফরাজী, তারেক আজিজ, সহ-সভাপতি আল আমিন শেখ, গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আফসার, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম, শরিফুল ইসলাম,হোসনে মুবারক রিশাদ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক শাহবাজ হোসেন বর্ষণ, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক (শরীফ-সিরাজ কমিটি) নাহিদ পারভেজ, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আদম সাইফুল্লাহ, শেখ মেহেদী হাসান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক (শরীফ-সিরাজ কমিটি) সৈকতুর রহমান, আক্তার হোসেন, আসাদুজ্জামান আসাদ।

তরুণদের মধ্যে অনেকেই গোপন লবিং করে যাচ্ছে, ক্যাম্পাসে ব্যানার লাগিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে মোজ্জাকির হোসেন সবুজ, রাহী জাওয়ারী রুবেল,মেহেদী বাবু, রিয়াদ খান, রাশেদ পাটুয়ারীসহ আরো অনেকের নামের ই গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, প্রায় পাঁচ মাস ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রেম ঘটিত তুচ্ছ কারণে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মীরা। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে।

এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি উভয় গ্রুপের দিনব্যাপী সংঘর্ষে সাংবাদিক সহ ২৫ জন আহত হয়। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।


এবিএন/মোস্তাকিম ফারুকী/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ