আজকের শিরোনাম :

নুসরাত হহত্যাকারীর শাস্তির দাবিতে, জবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ২২:২৮

ফেনীর সোনাগাজী মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীরন করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার প্রতিবাদ ও দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধনের করেন তারা।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় মানব বন্ধনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. দিপীকা রাণী সরকার। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা, অধ্যাপক ড. শাহজাহান, অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম, অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক ড. হোসনে আরা জলী, জবি নীল দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, সাধারণ সম্পাদ ড. মোস্তফা কামাল প্রমূখ। মানব বন্ধনে শিক্ষকদের সাথে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করেন সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীসহ অনেকেই।

মানব বন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, নারী অথবা দূর্বল কারো উপর আক্রমন করা হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় এসবের প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু আজকের মানব বন্ধন আমাদের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থী কাছে আমাদের একটা দায়বদ্ধতা। একজন মাদরাসা শিক্ষার্থীর উপর এমন পাশবিক নির্যাতনের সাথে জোড়িত ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক ছাত্র এবং ছাত্রীসহ অনেকেই। দেশের অন্য যেকোন জায়গায় এ ধরনের নির্যাতনের যে স্বাভাবিক শাস্তি হয়ে থাকে তার থেকে আরো কড়া শাস্তি হওয়া দরকার। এই শাস্তির পরিমান দ্বিগুন হওয়া উচিত। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সম্মিলিত ভাবে এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি যাতে এমন ঘটনা আর কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে না দেখি।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই মনে করেন কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব ঘটানা বেশি ঘটছে। আসলে বিষয়টা তা না। অন্য অনেক জায়গায় এমন ঘটনা ঘটে । কিন্তু আমরা মিডিয়ার কারণে হোক বা ফোকাসিং না হওয়ার কারণে হোক শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘটনাই বেশি দেখি। যারা শিক্ষক তারা কিন্তু এই সমাজ থেকেই আসছে। লোভ লালসা সমাজের একটি ব্যাধী।

শিক্ষকতা একসময় ব্রত ছিল। আগে যারা শিক্ষকতা করতো তাদের লোভ লালসা এসব ছিল না। আগের শিক্ষকরা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ছিল। অনেক দারিদ্র জীবন যাপন করতো তারা। কিন্তু আমরা আন্দোলন করে শিক্ষকতা পেশাটাকে আকর্ষনীয় করে তুললাম। একসময় শিক্ষকতায় মেধাবীরা আসতো না। কিন্তু আমরাই আন্দোলন করলাম শিক্ষকতাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে হবে। আমরা করতে চেয়েছিলাম আকর্ষনীয় , হয়ে গেছে লোভনীয়। এখন শিক্ষকতা একটা লোভনীয় পেশায় রুপ নিয়েছে।

বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বা অনেকে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বানাচ্ছে তারা এখন অতিমাত্রায় এই পেশায় ঢুকে যাচ্ছে। যাদের চামড়ার ব্যবসা, মাছের ব্যবসা করার কথা ছিল কিংবা কালো টাকা হালাল করার জন্যও অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে তার অধ্যাক্ষ হয়ে বা প্রধান হয়ে বসে পড়েন। যার শিক্ষক হওয়ার নুন্যতম যোগ্যতা নেই, সে শিক্ষক প্রধান হয়ে বসে গেছে। অনেকের জমি আছে বা বড়লোক হবার সহজ পদ্ধতি পেয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা। মাদ্রাসা করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

ড. মীজানুর রহমান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যৌন নিপীড়নকে কখনো ছাড় দেইনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যৌন নিপীড়নের দায়ে চাকুরীচ্যুত হয়েছে, পদন্মতি আটকে দেওয়া হয়েছে। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবার যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি।

এবিএন/মোস্তাকিম ফারুকী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ