ছাত্রলীগ পরিচয়ে রাবি শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি

ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি করেছেন স্থানীয় কয়েক যুবক। ভুক্তভোগী আবু ইউসুফ সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ও কামারুজ্জামান সুমন গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারের ব্যতিক্রম লাইব্রেরির পাশের একটি দোতলা ভবনে তাদের জিম্মি করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই দুই শিক্ষার্থী।

ঘটনার বরাত দিয়ে সাজিদ বলেন, ‘আমি ও সুমন বিনোদপুর বাজারের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় দুটি রুম ভাড়া নিয়ে টিউশনি করাই। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ কয়েকজন যুবক এসে নিজেদের স্থানীয় ছাত্রলীগের বড় নেতা দাবি করেন এবং এখানে মাদক ব্যবসা করা হয় অভিযোগ তোলেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে মারধর শুরু করে এবং মানিব্যাগ-মোবাইল ছিনিয়ে নেন। এরপর তারা ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আমার সহকর্মীকে ফোন করে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয়। বাধ্য হয়ে আমি আমার সহকর্মীকে ফোন করি।’

‘ঘটনাস্থলে পৌঁছালে একই অভিযোগ তুলে তারা সুমনকেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। পরে তারা তাৎক্ষণিক ২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে সুমনকে আটকে রেখে সাজিদকে টাকা আনতে পাঠায়’ বলে জানান সুমন।

সাজিদ বলেন, ‘আমি দুতলা থেকে নিচে গিয়ে এক বড় ভাইকে ফোন করে ঘটনাটি জানাই। ওই ভাই পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তবে যাওয়ার সময় ‘দিনার’ নামের উল্লেখ করে একজন একটি মোবাইল নাম্বার (০১৭৩৭-৬৮৩৯৩৪) দিয়ে টাকা এনে যোগাযোগ করতে বলেন।’

এ বিষয়ে দিনারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন। বলেন, ‘আজ আমার বাবার মৃত্যু বার্ষিকী ছিল, তাই বাসা থেকে বেরই হইনি। এসব মিথ্যা অভিযোগ।’কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি ‘রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য’ বলে পরিচয় দেন।

এ ঘটনায় নিরাপত্তা শঙ্কায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। ঘটনায় উপস্থিত মতিহার থানার ডিউটিরত উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) সিদ্দিক হুসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাটি শোনা মাত্র আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। কিন্তু আমাদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তারা পালিয়ে যায়। এখন ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকরা ঘটনাটি জানানো মাত্র আমি মতিহার থানা পুলিশকে অবহিত করি। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও পুলিশকে বলে দিয়েছি।

এবিএন/উমর ফারুক/জসিম/তোহা