আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশে সমাজকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি চাই: জবি উপাচার্য

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০১৯, ১৯:৩৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচর্য অধ্যাপক ড.মিজানুর রহমান বলেছেন, বহির্বিশ্বে সমাজকর্ম হল একটি পেশা। কিন্তু বাংলাদেশে সমাজকর্মকে কোন পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি।  বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়, উপজেলায় সমাজসেবা অফিস আছে, আছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।  যেখানে কর্মে নিয়োজিত আছে যেকোন বিষয়ে ডিগ্রি ধারণকারী শিক্ষার্থীরা।  হাসপাতালে যেমন মেডিকেলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ছাড়া ডাক্তার নিয়োগ করা যায় না, ঠিক তদ্রুপ সমাজ সেবা অফিসগুলোতেও সমাজকর্মে অধ্যয়নকারীদের নিয়োগ দেওয়া উচিৎ।  কেননা সমাজকর্মের শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানসম্পন্ন জ্ঞান সমাজের সমস্যা ও এই সমস্যা সমাধানের উপায় সম্পর্কে।  বাংলাদেশ সরকার বিপুল পরিমাণ বাজেট দিয়ে থাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবছর সমাজের উন্নয়নের জন্য।  তাই সরকারের টাকার সঠিক ব্যবহারের জন্য, সমাজের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য সমাজকর্ম কে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিকল্প আর কিছু হতে পারে না।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব সমাজকর্ম দিবস উপলক্ষে জবি সমাজকর্ম বিভাগের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শেষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম চত্বরের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করে র‌্যালিটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।  উক্ত র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।  দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‌‘Promoting importance of human relationship’।   

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন- সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম, অধ্যাপক ড. মস্তুফা হাসান, সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইন, সহকারী অধ্যাপক জাফর ইকবাল, শহিদুল হক, মোস্তাফিজ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মিফতাহুল বারী, মামুনুর রশীদ শেখ, পার্থ সারথীসহ আরো অনেক শিক্ষকগণ।

সমাজকর্ম বিভাগের সেমিনারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে পারলেই বিশ্ব শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাবে।  মানুষ-সমাজ ও প্রকৃতিতে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি সমাজ থেকে 'কালচারাল ল্যাগ' দূরীকরণের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন এক্সক্লুসিভ সোসাইটি গঠিত হতে পারে। সবশেষে তিনি জ্ঞান ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ হয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সমাজকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশ উন্নয়ন সম্ভব। সমাজকর্ম আমাদের শিক্ষা দেয় কিভাবে সামাজিক হতে হয়, কিভাবে সমাজের সীমিত সম্পদ ব্যাবহার করে সুখী ও শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করা যায়।

অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, আজ সমাজকর্ম দিবস। অর্থ্যাৎ সমাজকর্মের নির্দিষ্ট একটা দিন আছে যা আন্তর্জাতিকভাবে সারা বিশ্বে পালন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত খুব কম সংখ্যক বিষয় ই আছে, যেগুলোর নামে আন্তর্জাতিকভাবে কোন দিবস পালন করা হয়। সমাজকর্ম যেহেতু সমাজের সাথে জড়িত তাই সমাজের সমস্যা দূরীকরণে, সুষ্ঠু,সুন্দর সমাজ বিনির্মানে সমাজকর্ম কে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হউক বাংলাদেশে।

পরিশেষে সমাজকর্ম সমিতির মডারেটর সহকারী অধ্যাপক মিফতাহুল বারী বলেন, আজ বিশ্ব সমাজকর্ম দিবসে আমার প্রথম দাবি থাকবে বাংলাদেশ  সরকারের কাছে সমাজকর্ম কে অন্যান্য উন্নত দেশের মত বাংলাদেশেও পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হউক। তিনি আরো বলেন, সমাজকর্ম সমিতির মডারেটরের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই আমার প্রথম পোগ্রাম।  ভবিষ্যতে এমন পোগ্রামের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।  সমাজকর্ম সমিতি শুধু সমাজকর্ম দিবস উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার করবে এবং দেশের যেকোনো সামাজিক সমস্যা সমাধানে, ডিপার্টমেন্টের ছাত্রছাত্রীদের উন্ননয়নের জন্য কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

এবিএন/মোস্তাকিম ফারুকী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ