আজকের শিরোনাম :

ছাত্রলীগ ছাড়া অধিকাংশ প্যানেলের ভোট বর্জন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০১৯, ১৫:২১

ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ ছাড়া অধিকাংশ প্যানেল। নতুন করে ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে এসব প্যানেলের পক্ষে থেকে।

আজ সোমবার বেলা ১টায় ভোটের শেষ পর্যায়ে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় সংগঠনগুলোর জোট, কোটা আন্দোলনকারীদের বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দুই মোর্চ স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ ও স্বতন্ত্র জোট এবং ছাত্র ফেডারেশন।

পরে মধুর ক্যান্টিনে আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিটন নন্দী বলেন, ‘আমরা এই প্রহসন ও জালিয়াতির নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

লিটন নন্দী নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন, একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণ করতে হবে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জিএস প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘ভোট ডাকাতি, জালিয়াতি ও প্রশাসনের এই নীলনকশার নির্বাচন আমরা মানি না।’ তিনি বলেন, ‘সকালে স্যার এ এফ রহমান হলসহ অন্যান্য হলে অনিয়মের দৃশ্য দেখে আমরা রোকেয়া হলে যাই। সেখানে নয়টি ব্যালট বাক্সের মধ্যে ছয়টি আনা হয়েছে। আর তিনটি বাক্স তালা মারা একটি কক্ষে রেখে দেওয়া হয়েছে।’

রাশেদ খান বলেন, ‘সব ছাত্রসংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলব। আমরা বিক্ষোভ করব এবং আমাদের কর্মসূচি লাগাতারভাবে চলতে থাকবে।’

ছাত্রদলের প্রতিনিধিরাও এ সময় মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত থেকে তাদের সমর্থন দেন। পরে তারাও পৃথক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এ ঘোষণা দেন ও নতুন নির্বাচনের দাবি জানান।  

পরে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে প্রশাসনের ব্যর্থ এবং অনিয়ম ও নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের কারণে শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারেনি, এমন অভিযোগ এনে ভোট বাতিলের দাবি জানিয়েছে সরকার সমর্থিত জাসদ ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীও।

ভিসি ভবনে অবস্থান নিতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা

জাসদ ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব শামীম বলেন, ২৮ বছর পর হওয়া এ ভোট নিয়ে মানুষের অনেক আশা ছিল। তবে সেই আশা পূরণ করতে পারেনি প্রশাসন। ভোট সুষ্ঠু হয়নি। এই ভোট বাতিল করে পুনরায় ভোট আয়োজন করতে হবে।

ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেল বলেন, ভোট সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। আমরা পুনরায় ভোটের দাবি জানাচ্ছি।

আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি হলে একযোগে ভোট শুরু হলেও রোকেয়া হল ও কুয়েত মৈত্রী হলে ভোট শুরু করা যায়নি। এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর রোকেয়া হলের ভোট শুরু হলেও পরে আবার বন্ধ হয়ে যায়। কুয়েত মৈত্রী হলের ভোট গ্রহণ শুরু হয় সোয়া তিন ঘণ্টা দেরিতে, বেলা ১১টা ১০ মিনিটে।

পরে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা হলের কুয়েত মৈত্রী হলের একটি কক্ষ থেকে এক বস্তা আগে থেকে সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছেন। শিক্ষার্থীদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত হন প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্টকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।

এই নির্বাচনে মোট ভোটার ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। আর ডাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে মোট ২২৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিটি হলে নির্বাচিত হবেন ১৩ জন করে। সেই হিসাবে ১৮ হল সংসদে প্রার্থী রয়েছেন মোট ৫০৯ জন।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ