চকবাজারের আগুনে নিখোঁজ দুই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:১৬
চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টি ও তার বান্ধবী রেহনুমা দোলার পরিবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এমন তথ্য জানিয়েছে তাদের পরিবার।
নিখোঁজ বিষয়ে বৃষ্টির বাবা জসিম উদ্দিন জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমিতে কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন বৃষ্টি ও দোলা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৃষ্টির সর্বশেষ কথা হয় রাত ১০টা ০৪ মিনিটে। চকবাজারে আগুন লাগে ১০টা ৩৮ মিনিটে। এরপর থেকে বৃষ্টি ও দোলা নিখোঁজ। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
ফোন বন্ধ পেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় নিখোঁজ দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলের পাশেই ছিল তাদের অবস্থান। এ তথ্য জানার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ (ঢামেক) রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরিবারের সদস্যরা যখন তাদের সন্ধান করছিলেন তখন একটি ফোন আসে বৃষ্টির বাবার কাছে।
ফোনে বলা হয়, এক লাখ টাকা দিলে মেয়েকে ফেরত দেওয়া হবে। ডিজিটাল আর্থিক সেবা (ডিএফএস) ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর পর থেকে ওই মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।
লালবাগ থানায় এ ঘটনায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন তিনি। প্রতারণার ঘটনার পরে আরেকটি অভিযোগ দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমি মেয়েকে ফেরত পেতে চেয়েছিলাম। পুলিশ বলছে এটা প্রতারণা।
অভিযোগটি তদন্ত করছেন লালবাগ থানার এস আই মো. মামুন হোসেন।
তিনি বলেন, থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করে কলটি করা হয়েছিল। কারও নম্বর থেকে এই কলটি আসেনি। আমরা সিডিআর (কল ডিটেইলস রেকর্ড) চেক করে এমন কোনও তথ্য পাইনি। রাত ১০টা ৩১ মিনিটে বৃষ্টির ফোন বন্ধ হওয়ার পর তার নম্বর থেকে আর কোনও কল আসেনি বা যায়নি। এই প্রতারণার ঘটনায় সাইবার ক্রাইমে মামলা হবে।
মামুন হোসেন বলেন, এই প্রতারণা সহজে চিহ্নিত করা যায় না। এগুলো বের করতে যথেষ্ট সময় লাগে। তবে তাদের ট্রেস করা যায়। কিন্তু সময় লাগবে। আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
এদিকে ডিএমপি লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান বলেন, শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকা থেকে কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটা প্রায় অসম্ভব। আশপাশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা জানান, থার্ড পার্টির মাধ্যমে এই ফোন কলটি বৃষ্টির বাবার কাছে করা হয়েছিল। এটা ডিজিটাল প্রতারণা। প্রতারককে শনাক্ত করার কাজ চলছে।
এদিকে আগুনে পুড়ে নিহত অজ্ঞাতদের মরদেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। এই মরদেহগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) সংগ্রহ করেছে সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ)। আগুনে পুড়ে মারা গেছে এই সন্দেহ থেকে নিখোঁজ বৃষ্টি ও দোলার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য সিআইডির কাছে ডিএনএ নমুনাও দিয়েছেন দুই পরিবারের সদস্যরা।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ