আজকের শিরোনাম :

জবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটি বহাল করার গুঞ্জন, নতুন কমিটি চায় নেতারা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:১৫ | আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২৩:০৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(জবি) শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির বহাল হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। কমিটি বহাল করার জন্য প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে স্থগীত কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি। তারা এখন নির্ঘুম দিনরাত কাটাচ্ছেন বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, বর্তমানে তরিকুল-রাসেল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের পেছনে ঘুরছেন। জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের আস্থাভাজন হওয়ায় কমিটি বহাল হবে মনে করছেন তারা। স্থগিত কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন এক নেতার পেছনে ঘুরছেন বলেও জানা জায়।

এদিকে, গত বছরের ১ এপ্রিল নগর ভবনে টেন্ডার জমা নিয়ে আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলাইমানের কর্মীদের সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের কর্মীদের মারামারির জেরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিতের আড়াই ‘ঘণ্টার মধ্যে স্থগতির আদেশ তুলে নিয়ে আবার বহাল করেছিলেন।  

কমিটিতে স্থান না পাওয়া কয়েকজন সিনিয়র নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এক বছরের জন্য তরিকুল-রাসেল কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।  কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের অক্টোবরে।  তারা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বহাল না করে নতুন কমিটি দেওয়ার জন্য আহ্বান করেন।  এ নিয়ে কমিটি ঘোষণার আগেও আলোচিত হলেও কেন্দ্রীয় সংসদ প্রবাবশালীদের চাপে পড়ে তাকে সাধারণ সম্পাদক করতে বাধ্য হয়েছিল বলে মনে করেছিলেন ত্যাগি নেতা-কর্মীরা।

এদিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্থগিত তরিকুল-রাসেল কমিটির ২৫ এর অধিক নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিস্কার করেছে প্রশাসন।  কমিটি ঘোষণার পর থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পরে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।  বিভিন্ন সময়ে ঘটনায় আদর, শান্ত, তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, মেহেদী হাসান এবং সিএসই বিভাগের আব্দুল্লাহ আল রিফাত, মেহেদী, যুগ্ন সম্পাদক রিশাদ, শাকিল, রাজিবসহ ২৫ এর অধিক শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়।

এদিকে, স্থগিত কমিটির কর্মীরা যেন কোনভাবেই অপকর্ম থেকে দূরে থাকতে পারছেন না। কমিটি স্থগিতের পরের দিন (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইয়াবাসহ পুলিশ তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে। এর আগেও তারা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে বিতর্কিত হয়ে পড়েছিল।  এরা সবাই সাধারণ সম্পাদক রাসেলের কর্মী।

স্তগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন রাসেল নিজেও মাদক ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ আছে।  ২০১১ সালের ২৬ আগস্ট ৫২২ পিস ইয়াবা নিয়ে পল্টন থানায় ধরা পড়ে।  পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর ৯ (খ) ধারায় ৫৩ দিন জেল-হাজতে ছিলেন।  ইয়াবাগুলো রাসেলের প্যান্টের ডান পকেট থেকে উদ্ধার করা হয় বলে মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।  পরে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে মুচলেখা নিয়ে জামিন নেন তিনি।  এছাড়া অপর এক চাঁদাবাজি মামলায় আরও ২০ দিন জেল-হাজতে ছিলেন রাসেল।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।  

পুলিশের কাছে আটক কর্মীদের কথা উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন রাসেল বলেন, তারা ছাত্রলীগের কেউ না।  কমিটিতে যে কয়জন আছে তারাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।  

স্থগীত কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কমিটি স্থগিত করা হয়নি শুধু কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গত ঘটনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ দিন পর তদন্ত কমিটি রায় দিবে। যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের শাস্তি প্রদান করা হবে। স্থগিত কমিটির বহাল করার জন্য লবিং-তদবির সম্পর্কে তিনি বলেন, ছাত্রলীগে লবিং-তদবিরের কোন জায়গা নেই। এখান সবাই যোগ্যতা অনুযায়ী পদ অর্জন করে।

স্থগিত কমিটি নিয়ে জানতে চাইলে তরিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভালো বলতে পারবেন।  এ দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতিকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।

এবিএন/রাজ্জাক/জসিম/এআর

এই বিভাগের আরো সংবাদ