আজকের শিরোনাম :

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা: 'গ' ইউনিটে ফেল, 'ঘ' ইউনিটে প্রথম!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ২০:০৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার ইউনিটভিত্তিক ফলে ব্যাপক তারতম্য দেখা গেছে। এক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্র অন্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থানে পাস করেছে। এমনকি 'ঘ' ইউনিটে মেধা তালিয়ায় ১০০ ক্রমের মধ্যে থাকা ৭০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণই হতে পারেনি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। এতে ২৬.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।

এর আগে ১২ অক্টোবর পরীক্ষার দিনই এই ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের মধ্যেই ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে মেধা তালিকায় থাকা কিছু শিক্ষার্থীর দুই ইউনিটের ফলাফলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য দেখা গেছে।

ঘ ইউনিটের পরীক্ষার ফল যাচাই করে দেখা গেছে এই ইউনিটে সর্বোচ্চ মেধা তালিকায় থাকা একাধিক ভর্তিচ্ছু তাদের নিজের ইউনিটের পরীক্ষায় পাসই করতে পারেননি। অথচ কয়েক দিনের ব্যবধানে আরেক ইউনিটের পরীক্ষায় রীতিমতো ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছেন।

পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, অস্বাভাবিক কোনো কিছু পেলে ভাইভাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদি আমার কাছে মনে হয় তখন কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিবো। এখানে আমি কোনো ছাড় দেব না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, জালিয়াতি করে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভর্তি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ঘ ইউনিটে মেধা তালিয়ায় ১০০ ক্রমের মধ্যে থাকা ৭০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি।

জাহিদ হাসান আকাশ ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। গত ১২ অক্টোবর তিনি ঢাবির সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির জন্য ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দেন। সেখানে ব্যবসায় শাখা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এই শিক্ষার্থী বাণিজ্য অনুষদে ভর্তির জন্য দেওয়া গ ইউনিটের পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাবির গ ইউনিটের পরীক্ষায় তিনি বাংলায় পেয়েছিলেন ১০.৮ ইংরেজিতে পেয়েছিলেন ২.৪০। অথচ এই শিক্ষার্থী ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় বাংলায় ৩০ এর মধ্যে ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ২৭.৩০ পেয়েছেন।

ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে আসা এই শিক্ষার্থী ঢাবির গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বমোট ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছিলেন ৩৪.৩২। অথচ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ১১৪.৩০ পেয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকার বাণিজ্য শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০ বছরে ১২০ এর মধ্যে ১১৪.৩০ কেউ পায়নি। এছাড়া ঘ ইউনিটে বাণিজ্য শাখায় যিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন ১২০ এর মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৯৮.৪০। মেধাক্রম প্রথম থেকে দ্বিতীয় এর ব্যবধান নজিরবিহীন।

আরেক শিক্ষার্থী তাসনিম বিন আলম ঢাবি ঘ ইউনিটে (বিজ্ঞান শাখায়) প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ বিজ্ঞান শাখার এই শিক্ষার্থী তার নিজের অনুষদ ক ইউনিটের পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ৪৩.৭৫ পেয়ে ফেল করেছিলেন। সেই তিনিই ঢাবি ঘ ইউনিটে সে ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০৯.৫০ পেয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকার বিজ্ঞান শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ