আজকের শিরোনাম :

ভর্তি পরিক্ষায় কড়া নিরাপত্তা

জবিতে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের উত্যক্তকারীদের পুলিশে সোপার্দ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:০৬

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘ইউনিট-২’ (মানবিক শাখা)-এর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।  আজ শনিবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট চারটি কেন্দ্রে শুরু হয় এ পরীক্ষা। শেষ হয় ১১টা ৩০ মিনিটে।

উল্লেখ্য,  শনিবারের লিখিত ভর্তি পরীক্ষার জন্য ৭৮৮টি (৭৭০+১৮) আসনের বিপরীতে ১৪ হাজার ৫৭১ জন শিক্ষার্থী মনোনীত হয়েছে। এতে আসন প্রতি লড়ছেন ১২ জন পরীক্ষার্থী।

ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে এক নারী পরীক্ষার্থী ২ ছাত্রলীগ কর্মীর যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উছেঠে।শনিবার (৬অক্টবর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে এমন ঘটনা ঘটে। অভিযোগ শোনার সাথে সাথে জবির সহকারী প্রক্টর সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক জাফর ইকবাল সেখানে ফোর্স পাঠান এবং অভিযুক্তদের ধরে নিয়ে আসেন প্রক্টর অফিসে।  

সহকারী প্রক্টর জাফর ইকবাল বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের অনিয়ম-অশৃঙ্খলতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তাছাড়া পরিক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ সুন্দর রাখতে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সুনাম রক্ষার্থে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি সর্বদা জাগ্রত ও তৎপর।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২য় সেমিস্টারের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী জয়নুল আবেদীন ও একই বিভাগের মোবারক ঠাকুর প্রিন্স।

অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই শেষে তাদের পুলিশে সোপার্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক হয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের বেশ কিছু কর্মীর তোপের মুখে পড়ে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল টিম এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ন্ত্রনে আনেন।

লিখিত অভিযোগে নারী শিক্ষার্থী জানান, আমি পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞান অনুষদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় ওরা দুজন আমাকে ডেকে নিয়ে যৌণ হয়রানীমুলক আচরণ করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গাকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে নানা ধরণে কুরুচিমুলক মন্তব্য করেন। শুধু অশালীন মন্তব্য করেই থেমে জাননি তারা। বরং আমি ওরনা পরিধান না করারও কারণ জানতে চায় এবং তারা মানিব্যাগ থেকে আমাকে ওরনা কেনার টাকা দিতে চায়।  এসময় তারা আমার সাথে সর্বোচ্চরকম অশালীন কথাবার্তা বলেন।

এ বিষয়ে ওই নারী শিক্ষার্থীর অভিভাবক তারই বড়বোন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, এমন আচরণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চরম হতাশাজনক।

অভিযোগের বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্রের বিরুদ্ধে একজন নারী ভর্তিচ্ছুর সাথে অশালীন আচরণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের কোতয়ালী থানায় সোপার্দ করেছি। এছাড়াও আগামী কর্মদিবসে সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাত্রলীগ কর্মীদের পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, আমি তাদের কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বলবো না। যারা পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল তারা অভিযুক্তদেরই বন্ধু-বান্ধব ছিল। তারা চেয়েছিল যেন, ঘটনাটি ক্যাম্পাসেই মীমাংসা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুর ইসলাম বলেন, যারা অন্যায় করবে তাদেরকেই শাস্তি পেতে হবে। সে যেই হোক না কেন।

এবিএন/মোস্তাকিম ফারুকী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ