আজকের শিরোনাম :

বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটিং অ্যালাউন্স প্রদান সমীচীন নয়: ইউজিসি চেয়ারম্যান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৭:০১

বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা আহ্বান একটি রুটিন কাজ এবং দায়িত্বের অংশমাত্র। অফিস চলাকালীন এসব কাজের জন্য সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ মোটেই সমীচীন নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ।

তিনি বলেন, দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিধ মিটিংয়ে সিটিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। অফিস চলাকালীন এসব মিটিংয়ের সিটিং অ্যালাউন্সসহ অন্যান্য খরচ বিশ্ববদ্যিালয়ে ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এসব রুটিন কাজের জন্য সিটিং অ্যালাউন্স প্রদান করা ঠিক নয় বলে তিনি জানান।

ইউজিসি আয়োজিত দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (রবিবার) এ কথা জানান।

ইউজিসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম ও প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের বক্তব্য দেন। সেমিনার মুখ্য আলোচক ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। সেমিনারে ইউজিসি’র পরিচালকসহ ২৭ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অংশ নেন।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ নৈতিকতা বহির্ভূত এবং বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সদস্যরা অবৈধ হারে সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ করছে, যা মোটেও কাম্য নয়।

তিনি সমাজে দুর্নীতি প্রতিরোধে পাঠ্যক্রমে সততা, নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক মূল্যবোধের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবার ও স্কুল পর্যায় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। এছাড়া, দুর্নীতিবাজদের সম্মানিত করার পরিবর্তে ঘৃণা করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

ইউজিসি সদস্য প্রফেসর দিল আফরোজা বেগম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে করা কমিশনের তদন্ত দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তাঁর অধীনে গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ১৩টি তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ একটিও বাস্তবায়িত হয় নি। এ রকম চলতে থাকলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি না কমে বরং বাড়তে থাকবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রফেসর আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যাবে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানে অটোমেশনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। উন্নয়ন অর্থনীতিবিদরা মনে করেন উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্নীতি অনেকাংশে কমায় কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উল্টোটাই ঘটেছে।

মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের চেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে দুনীর্তি। সঙ্গবদ্ধ দুর্নীতির কারনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুর্নীতি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অডিট ও তদন্ত সেলকে আরো জোরদার করার পরামর্শ দেন।

সেমিনারে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শক্তিশালী করা, অন্তর্ভুক্তিমুলক জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, এডুকেশন মোটিভেশন, ট্যাক্স রিটার্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।  
 

এবিএন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ