জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষে ভর্তি আবেদন
সার্ভারের সমস্যায় শেরপুরে ভোগান্তিতে হাজারো শিক্ষার্থী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:১৪
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদনের দিন শুরু হয়েছে গত ০১ সেপ্টেম্বর থেকে। কিন্তু শুরুর দিন থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার সমস্যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে বগুড়ার শেরপুরের হাজার হাজার ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া ও শিক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিকায়ণের পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজ অনলাইনে করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ডিগ্রী ভর্তি ফরম, মাস্টার্স ১ম বর্ষ রিলিজের আবেদন, মাস্টার্স শেষ বর্ষ(প্রাইভেট)এর ভর্তি ফরম ও অনার্স ১ম বর্ষের এর আবেদন ফরম পুরণ গত কয়েক বছর আগ থেকেই শুরু হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু এইসব আবেদন ফরম পূরণ করতে এসে সার্ভার সমস্যার জন্য বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে অসংখ্য শিক্ষার্থী।
শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ড, কলেজ রোড, মির্জাপুরসহ শহরের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা অনলাইন পয়েন্ট গুলোতে কথা বলে জানা যায় সারাদিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রবেশ করাই যায়না। আবার কখনো কখনো প্রবেশ করা গেলেও আবেদনের শুরুতেই, বা মাঝামাঝি বা শেষ পর্যায়ে গিয়ে সফল হওয়া যায়না।
এদিকে প্রতিনিয়ত গ্রাম গঞ্জ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা অনলাইন পয়েন্টে এসে ভীড় করছে কিন্তু কোন সার্ভিস না পেয়ে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। তাদের আবেদনের সময় সীমা শেষ হওয়ার পথে গেলেও কর্তৃপক্ষের বিশেষ কোন পদক্ষেপ এখনও নজরে আসেনি। বিশেষ করে অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী বেশী হওয়ায় তারা বেশ বিচলিত হয়েই ঘোরাঘুরি করছে অনলাইন পয়েন্টগুলোতে।
সর্বশেষ অনলাইন পয়েন্ট মালিকেরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে গভীর রাতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন আবেদন সম্পন্ন করার। শহরের বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত রুমা কম্পিউটারের রিপন ও নয়ন মাহমুদ জানান গতরাতে সারারাত জেগে ১৮০ টা বুকিং নেয়া ফরমের মধ্যে মাত্র ২৯ টা সফল হতে পেরেছেন। তারা জানান সারারাত প্রচেষ্টার ফলে ভোর ৪ টার দিকে কিছু কিছু কাজ করতে পেরেছেন।
আজাদ কম্পিউটারের মালিক জানান এক দিকে সরকারের সবকিছু ডিজিটালাইজ্ড করার ঘোষণা অন্যদিকে সার্ভার সমস্যা এ যেন গরীবের ঘোড়ারোগ। এখন ব্যবসার মোক্ষম সময় কিন্তু কাজ করতে পারছিনা। তাই বাধ্য হয়েই গভীর রাতে কাজ করে কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি”। এদের মধ্যে অনেক দোকান মালিক রয়েছে যারা এই ব্যবসার পেছনে টাকা বিনিয়োগ করতে গিয়ে বিভিন্ন সংস্থার কাছে ঋনী হয়ে পড়েছেন। এখন আশানুরুপ কাজ করতে না পেরে তাদের পথে বসার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
সাইদুর রহমান নামে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী জানান, তিনি গত তিন দিন ধরে চেষ্টা করেও অনলাইনে আবেদন পাঠাতে পারেননি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রবেশ করার পর শিক্ষার্থীর রোল নম্বর দিয়ে ক্লিক করা হলে কোনো কাজ হয় না। একই সমস্যায় ভুগছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
সামিট কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করা নিরা ইসলাম নামে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী জানান, তিনি গত তিন দিন ধরে চেষ্টা করেও অনলাইনে আবেদন পাঠাতে পারেননি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবে প্রবেশ করার পর শিক্ষার্থীর রোল নম্বর দিয়ে ক্লিক করা হলে তার এইচ এস সি রোল তার নয় বলে নোটিশ দেখানো হচ্ছে অথচ রোলটি তার।
এরকম আরো বহু সমস্যা বিরাজ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে। ফলে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তির আবেদন করতে পারবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
নিজের সন্তানের আবেদন ফরম পূরণ করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, দেশকে ডিজিটালাইজ্ড করার নামে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটই এখন পর্যন্ত মানসম্মত করতে পারছেন না তাহলে কী আমরা ধরে নেব যে, এ সবই লোক দেখানো?
এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা
এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা
এই বিভাগের আরো সংবাদ