আজকের শিরোনাম :

বৈরুত বিস্ফোরণ : বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৯ সদস্য আহত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২০, ১১:৩৪

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৯ সদস্য আহত হয়েছেন।  আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

নৌবাহিনীর যে ১৯ সদস্য আহত হয়েছেন তারা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস বিজয়ে অবস্থান করছিলেন। বিস্ফোরণে জাহাজটিও সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সারি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বিস্ফোরণে সাধারণ কোনো বাংলাদেশি নিহত বা আহত হননি। তবে কয়েকজন সামরিক বাহিনীর সদস্য কিছুটা আহত হয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৈরুতে অবস্থান করা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজে মোট ১১০ সদস্য ছিল। কিন্তু ঘটনাটি সন্ধ্যার আগ দিয়ে হওয়ায় ওই সময় অনেকেই জাহাজে ছিলেন না।

উল্লেখ্য, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) সন্ধ্যায় জোড়া বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত এবং প্রায় চার হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড়ু গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে, এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়।

লেবাননের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান বলেছেন, অত্যন্ত বিস্ফোরক রাসয়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। কর্মকর্তারা বলছেন এই বিস্ফোরণ দুর্ঘটনা। পরিকল্পিতভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। তারা বলছেন গুদামে ছয় বছর ধরে মজুদ রাখা অত্যন্ত বিপদজনক বিস্ফোরক থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এই ঘটনাকে বিপর্যয় আখ্যা দিয়েছেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিল তীব্র ও কান ফাটানো। ভিডিও ফুটেজে অনেক গাড়ি এবং ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দেখা গেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে ধ্বংসস্তুপের নিচে মানুষকে আটকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টু্‌ইট বার্তায় বলেছেন, কোনও গুদামে দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে মজুদ রাখার বিষয়টি ‘অগ্রহণযোগ্য’।

বন্দর এলাকা থেকে পাওয়া ভিডিওতে প্রথম বিস্ফোরণ স্থল থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলি উঠতে দেখা যায়। টুইটারে অনেকে মোবাইল ফোনে তোলা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ভিডিও শেয়ার করেন। টুইটারে পোস্ট করা এই ভিডিওর সাথে বলা হয়, তারা বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে থাকেন এবং বিস্ফোরণে তাদের ভবনের কাঁচ ভেঙে গেছে।

প্রথম বিস্ফোরণের পর আরেকটি আরও বড় বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় আশপাশের ভবনগুলো ঢেকে যেতে দেখা যায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, বিস্ফোরণ এত শক্তিশালী ছিল যে তার মনে হয়েছিল তিনি মারা যাবেন। হাসপাতাল আহতদের ভিড়ে উপচে পড়েছে বলে বলা হচ্ছে। 

বিবিসির একজন সংবাদদাতা জানিয়েছেন, নিকটবর্তী হাসপাতালে এত আহত মানুষকে আনা হয়েছে যে সেখানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা অনেকগুলো আগুন নেভাতে হিমশিম খেয়েছে। প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সভাপতিত্বে সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়েছে এবং সরকারকে রাজধানী বৈরুতে দু সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা জারির সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ