আজকের শিরোনাম :

পুলিশ চেকিং জটে গাড়ির দীর্ঘ সারি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৬ | আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৯

রাজধানীর প্রগতি সরণির কোকাকোলা এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে চেকিংয়ের কারণে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে এ জট শুরু হয়। এ যানজট কুড়িল বিশ্বরোড ছাড়িয়ে গেছে। 

গাড়ির দীর্ঘ সারিতে অধিকাংশই ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার), কিছু স্টাফ বাস এবং মালবাহী লরি দেখা গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে হয়েছে অফিসগামীদের। এছাড়াও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সও আটকে রয়েছে। 

অনেকে ঘণ্টারও বেশি এ চেকিংজটে বসে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। 

ফারুক হোসেন নামে একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা ট্রাফিক এলার্ট গ্রুপে লেখেন, ’নরমাল সময়েও এমন জ্যাম পাইনি কোনো দিন।’

এদিকে এয়ারপোর্ট রোডেও একই রকম ভোগান্তির তথ্য পাওয়া গেছে। কুর্মিটোলা হাসপাতালের বিপরীতে বসানো চেকপোস্টেও গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। 

বিধিনিষেধের প্রথম দিন নববর্ষের কারণে সরকারি ছুটি থাকায় বুধবার ফাঁকা সড়কগুলো বৃহস্পতিবার কিছুটা ভিন্ন রূপ পেয়েছে। প্রাইভেট কার আর সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে চলাচল করছেন জরুরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা।

চেকপোস্টগুলোতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ সদস্যরা। চেকপোস্ট বসিয়ে সড়কে চলাচল করা সব গাড়িগুলোই তল্লাশি করতে দেখা যায় তাদের। যাদের ‘মুভমেন্ট পাস’ আছে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও অন্যদের বিরুদ্ধে নেয়া হয় ব্যবস্থা।

পুলিশি চেকপোস্টের কারণে রাজধানীর মধ্যবাড্ডা, গুলশান-১ এর পুলিশ প্লাজা থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত এবং রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়। মগবাজার, মৌচাক ও মালিবাগ, সায়েন্স ল্যাব, ধানমন্ডি, শ্যামলি মোড়েও ছিল একই চিত্র।

জরুরি কাজে অফিসমুখী যাত্রীদের ছেড়ে দেয়া হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যারা বের হয়েছেন, তাদের পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরার মুখে। যারা জরুরি সেবা দিতে অফিসে যাচ্ছেন তাদের বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই পুলিশের। অন্যদের ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাসকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা।

রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। তাদের তল্লাশির কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এসময়, গণমাধ্যম ছাড়া প্রতিটি গাড়ির তল্লাশি নিতে দেখা যায় পুলিশকে।

তবে অনেকের অভিযোগ, মুভমেন্ট পাস নিতে গিয়ে নানা জটিলতায় পড়েছেন তারা। বিষয়টি নজরে আনা হলেও মানতে নারাজ দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।

বাজার করতে নিজের মোটরবাইক নিয়ে বের হয়েছিলেন মোকাব্বির আহমেদ। মধ্যবাড্ডায় পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়েন তিনি। মুভমেন্ট পাস না থাকায় তাকে গাড়িকে দেয়া হয় এক হাজার টাকার মামলা। মোকাব্বির বলেন, ‘কাঁচাবাজার করতে বের হয়ে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হলো।’

‘মুভমেন্ট পাস’ কেন আনেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নানাভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওয়েবসাইট থেকে সেটা কোনোভাবেই করতে পারছিলাম না। পুলিশকে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনছে না।’

করোনা মহামারির মধ্যে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পূর্ণকালীন না হলেও, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ঘণ্টা লেনদেনের সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো।

১২ এপ্রিল সরকারের দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের আনা-নেয়ায় প্রতিষ্ঠানকে পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে।

এসবের কারণে সকাল থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত ও ভাড়ায় চালিত গাড়ির উপস্থিতি ছিল বেশ লক্ষ্যণীয়।

বৃহস্পতিবার অবশ্য সড়কে নামা রিকশা নিয়ে কোনো আপত্তি করেনি পুলিশ। টহলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল বলেন, ‘রিকশায় অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছে। ব্যাংক ও কিছু অফিস খোলা থাকায় অনেকে অফিসে যাচ্ছেন। তাই আমরা এই সময়টাতে রিকশা চলাচলে কিছুটা ছাড় দিচ্ছি।’

অফিসের সময় পেরিয়ে গেলে আবারও যাত্রীদের মুভমেন্ট পাস আছে কি না তা চেক করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জরুরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মিনিট্রাকও এসময় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে।

চলমান বিধিনিষেধে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাসমূহ খোলা রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। এসবের মধ্যে রয়েছে- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্য দ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দর, নৌবন্দর ও সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে এসে সড়কে দেখা মেলে অনেক সাধারণ পথচারী। তাদের বিষয়ে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ