আজকের শিরোনাম :

মহাকবি কায়কোবাদের প্রয়াণ দিবস আজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২০, ১০:২৪

মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদের প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মতান্তরে ২৫ মার্চ, ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার সঠিক জন্মতারিখ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

‘কে ঐ শোনালো মোরে আজানের ধ্বনি, মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিলো কি সুমধুর, আকুল হইলো প্রাণ, নাচিলো ধমনি। কি-মধুর আযানের ধ্বনি’।- মহাকবি কায়কোবাদ এরূপ অসংখ্য কবিতাসহ অসাম্প্রদায়িক আধুনিক শুদ্ধ বাংলায় গীতিকাব্য ও কাহিনিকাব্য রচনা করে গেছেন। তিনি ছিলেন খাঁটি বাঙালি এবং মুসলমান। বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলমানদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে।

তার বাবার নাম শাহমত উল্লাহ আল কোরেশী ওরফে এমদাদ আলী এবং মায়ের নাম জোমরাত উন্নেসা ওরফে জরিফুন্নেসা খাতুন। কবির পিতৃপুরুষগণ বাদশাহ শাহজাহানের রাজত্বকালে বাগদাদের কোন এক অঞ্চল থেকে ভারতে আসেন। তাদের মধ্যে মাহবুব উল্লাহ আল কোরেশী ফরিদপুর জেলার গোড়াইলে বসবাস শুরু করেন। কায়কোবাদ মাহবুব উল্লাহ আল কোরশীর প্রপৌত্র। কবির বাবা ঢাকায় ওকালতি করতেন। কবির বয়স যখন এগারো তখন তার মা এবং বারো বছর বয়সে বাবা মারা যান। কবি পড়াশোনায় তেমন একটা এগোতে পারেননি। তিনি ঢাকা পগোজ স্কুলে ও আলিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করেন এবং এন্ট্রাস পরীক্ষার আগেই তার পড়াশোনার সমাপ্তি ঘটে।

অতি অল্পবয়স থেকে কায়কোবাদের সাহিত্য-প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। কায়কোবাদের কবি জীবন শুরু সেই বাল্যকালে মাদরাসার ছাত্রাবস্থায়। মাত্র বারো বছর বয়সে ১৮৭০ সালে তার প্রথম কবিতার বই ‘বিরহ বিলাপ’ রচনা করেন। পনের বছর বয়সে ১৮৭৩ সালে তিনি রচনা করেন তার দ্বিতীয় কাব্য ‘কুসুম কানন’।

কবি জীবনের প্রথম পর্যায়ের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য কাব্য ‘অশ্রুমালা’ প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে। এরপর তিনি মহাকাব্য রচনায় মনোনিবেশ করেন এবং ১৯০৪ সালে তার বিপুল আয়তনের মহাকাব্য ‘মহাশ্মশান’ প্রকাশিত হয়। ১৯১৪ সাল পর্যন্ত কায়কোবাদ কাব্যটির নানা আকৃতি ও প্রকৃতিগত পরিবর্তন সাধন করেন। ‘মহাশ্মশান’ এর পরে তিনি রচনা করেন ‘শিব মন্দির’ (১৯২১), ‘অমিয় ধারা’ (১৯২৩), ‘মহরম শরীফ’ (১৯৩৩) এবং ‘শ্মশান-ভস্ম’ (১৯৩৮) কাব্য।

১৯৫১ সালে ২১ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পুরাতন আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন হয়।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ