আজকের শিরোনাম :

মাসুদ রানার চরিত্র কাহিনি সব আমার সৃষ্টি : কাজী আনোয়ার হোসেন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২০, ১১:৪৭

‘মাসুদ রানা’র ২৬০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমকে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস যে রায় দিয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ এই সিরিজের জনক কাজী আনোয়ার হোসেন। ‘এই রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। আইনি লড়াই চালাব, আপিল করব। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাব,’ -বলেছেন তিনি ক্ষোভের গলায়।

সেবা প্রকাশনী এবং মাসুদ রানা মানেই কাজী আনোয়ার হোসেন। সেই চিরন্তন বিশ্বাসে এই রায় একটা বড় ধাক্কা। কাজী আনোয়ার হোসেন জানান, এমনটা হওয়ার পেছনে মামলায় তাদের সমান আইনি সুযোগ না পাওয়াও একটা কারণ, ‘আইনি প্রক্রিয়ায় যে কয়েকজনকে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছিল তাদের কয়েকজন যাননি; কয়েকজন লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। আমাদের আইনজীবী বলেছিলেন তাঁকে যেন এসব সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের সে সুযোগ দেওয়া হয়নি।’

তার এই দাবির বিষয়ে বিবেচনা করবেন আদালত। কিন্তু এই দাবির বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই যে ‘মাসুদ রানা সিরিজ, কাহিনি ও এর চরিত্রগুলো আমার সৃষ্টি। ট্রেডমার্ক সেবা প্রকাশনীর।’ তাহলে কিসের ভিত্তিতে শেখ আবদুল হাকিমের এমন দাবি এবং মামলা? উত্তরটা এ রকম, ‘এই সিরিজে বই আমি লিখেছি। শেখ আবদুল হাকিম লিখেছেন। আরো কয়েকজন লিখেছেন। এখন আবদুল হাকিম নিজেকে কিভাবে বলেন, ১১টি বই বাদে বাকি ২৬০টি বই উনার লেখা? কারণ এর মধ্যে আমি নিজে কয়েকটি লিখেছি। বিচিত্রা সম্পাদক শাহাদত চৌধুরীও পাঁচ-ছয়টা লিখেছেন। সেগুলোর কী হবে?’ দাবি প্রতিষ্ঠায় আরো কিছু তথ্য ও যুক্তিও আছে তাঁর, ‘শেখ আবদুল হাকিম ২০০৫ সাল থেকে সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে নেই। কিন্তু মাসুদ রানা সিরিজের বই তো বের হচ্ছে নিয়মিত। এখন পর্যন্ত ৪৬৬টি বই বেরিয়েছে এই সিরিজের। এখন আমার ছেলে লিখছে। প্রয়োজনে আমিও আবার লিখব। মাসুদ রানা সিরিজ সেবা প্রকাশনী থেকেই নিয়মিত বের হবে।’

সেবা প্রকাশনীর সব বই যে কাজী আনোয়ার হোসেন লিখেন না, এমন একটা আওয়াজ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সব সময়ই ছিল। কাজী আনোয়ার হোসেনও সেটা অস্বীকার করছেন না, ‘একটি কাহিনি বলে দিয়ে লেখার জন্য বলতাম। তিনি (শেখ আবদুল হাকিম) লিখে দিতেন। সেটা ঘষামাজা করে আমরা ছাপার উপযোগী করে ছাপতাম। তার পাওনাটুকু সঙ্গে সঙ্গেই দিয়ে দেওয়া হতো। তাই এই সিরিজের ক্ষেত্রে কপিরাইট কিংবা রয়ালটির সুযোগ নেই। যেমন সুযোগ নেই এই সিরিজের কোনো বই অন্য প্রকাশনী থেকে বের করার।’

নিজের লেখক স্বীকৃতির সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর কাছে রয়ালটি বাবদ প্রায় চার কোটি টাকা পাওনা হাকিমের। এমন দাবিকে পাত্তা দিতে রাজিই নন তিনি, ‘এটা অবিশ্বাস্য। এত টাকা থাকলে তো আমি রাজাই থাকতাম।’ যেকোনো বিরোধ এই পর্যায়ে যাওয়ার পর সমঝোতার আশা একটু বাড়াবাড়িই। আনোয়ার হোসেনও জানালেন, সেই সুযোগ আর নেই, ‘এই পর্যায়ে এসে সেটার আর সুযোগ নেই। আইনি পথেই যা হওয়ার হবে।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ